চোরাচালান রোধে শাহজালাল কাস্টমে যুক্ত হলো অত্যাধুনিক স্ক্যানার
১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:৩২
ঢাকা: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমসে যাত্রীদের আনা পণ্য দ্রুত খালাস, চোরাচালান রোধ এবং ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি করা পণ্য শতভাগ কায়িক পরীক্ষা নিশ্চিতের জন্য বসলো অত্যাধুনিক স্ক্যানার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, শাহজালাল বিমানবন্দর ও ঢাকা কাস্টম হাউসে চোরাচালান রোধ, যাত্রীদের আনা পণ্য দ্রুত খালাস এবং ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি করা পণ্য দ্রুত কায়িক পরীক্ষা, চোরাচালান রোধ এবং রাজস্ব আহরণ আরও বেশি গতিশীল করতে শাহজালাল বিমানবন্দর ও ঢাকা কাস্টম হাউসে ৪টি অত্যাধুনিক স্ক্যানার বসানোর পরিকল্পনা ছিল আগেই। তারই সূত্র ধরে ঢাকা কাস্টম হাউসে দুটি স্ক্যানার এসেছে। এর মধ্যে একটি স্ক্যানার এয়ারফ্রেইটের কার্গো গেইটে বসেছে। অন্য একটি স্ক্যানার আগামী সপ্তাহে ঢাকা কাস্টম হাউসের কুরিয়ারে বসবে। ঢাকা কাস্টম হাউসে যে দুটি অত্যাধুনিক স্ক্যানার বসানো হচ্ছে সেই দুটি স্ক্যানার মালয়েশিয়া থেকে আনা হয়েছে। যার নাম র্যাপিস্ক্যান স্ক্যানার।
কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা কাস্টম হাউসের কুরিয়ার এবং এয়ারফ্রেইটে বর্তমানে অত্যাধুনিক কোনো স্ক্যানার নেই। আর এই স্ক্যানার না থাকায় আমদানি পণ্য বিভিন্ন ধরনের কায়িক পরীক্ষার মাধ্যমে কার্যক্রম সমাপ্ত করতে হয় কাস্টমস অফিসারদের। ফলে কাস্টমের পক্ষে আমদানি পণ্য শতভাগ পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। একই সাথে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য থাকলে সেটা কাস্টমের পক্ষে সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে এই স্ক্যানার দুটি যুক্ত হলে কাস্টম কর্মকর্তাদের কষ্ট যেমন লাঘব হবে তেমনিভাবে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য সনাক্ত এবং রাজস্ব আহরণ আরও বাড়বে।
আরও জানা গেছে, এই স্ক্যানার যুক্ত হলে ঢাকা কাস্টম হাউসের যেকোনো পণ্য বিমান থেকে সরাসরি স্ক্যানার হয়ে কুরিয়ারে ঢুকবে। এরপর কাস্টমসের যাবতীয় কার্যক্রম শেষে পণ্য খালাস হবে। এছাড়া, এয়ারফ্রেইটে স্ক্যানার বসানোর ফলে আমদানি সব পণ্য শতভাগ স্ক্যানের মাধ্যমে খালাস হবে। অর্থাৎ এই স্ক্যানার দুটি যেকোনো ড্রাগ, মেডিসিন, আর্মস, বোমা বানানোর সরঞ্জাম বা স্পর্শকাতর যেকোনো কিছু সনাক্ত করতে সক্ষম। এমনকি আমদানিকারক একটি পণ্যের বিপরীতে অন্য পণ্য আমদানি করলেও এই স্ক্যানার মেশিন সেটি সনাক্ত করতে পারবে।
অপরদিকে শাহজালালে যে দুটি স্ক্যানার বসবে সেই দুটি অত্যাধুনিক স্ক্যানারের নাম স্মিথ ডিটেকশন হাই স্ক্যানার। আর এই স্ক্যানার দুটি জার্মানি থেকে কেনা হয়েছে। বর্তমানে স্ক্যানার দুটি দেশের পথে রওনা হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে স্ক্যানার দুটি শাহজালালে যুক্ত হবে। সেজন্য গত মাসে এনবিআরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল জার্মানি সফর করেন।
এই স্ক্যানার মেশিন দুটি শাহজালালে যাত্রী সেবায় ব্যবহৃত হবে। বর্তমানে শাহজালালে দুটি স্ক্যানার রয়েছে। আর এই দুটি যুক্ত হলে শাহজালালের কাস্টম চ্যানেলে ৪টি স্ক্যানার হবে। ফলে শাহজালালে একাধিক ফ্লাইট একসাথে ল্যান্ড করলে কাস্টমসের গ্রিন চ্যানেলে দীর্ঘ লাইন পড়বে না। বর্তমানে একসাথে কয়েকটি ফ্লাইট ল্যান্ড করলেই কাস্টমের গ্রীন চ্যানেলে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে এই দুটি অত্যাধুনিক স্ক্যানার যুক্ত হলে শাহজালালে ১-২ মিনিটেই যাত্রীদের ল্যাগেজ স্ক্যান হয়ে কাস্টম চ্যানেল অতিক্রম করতে পারবে।
এ বিষয়ে ঢাকা কাস্টম হাউসের সহকারি কমিশনার মো. সাজ্জাদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে দুটি আর কাস্টম হাউসের কুরিয়ার এবং এয়ারফ্রেইটে দুটি স্ক্যানার বসবে। এর মধ্যে কাস্টম হাউসে যে দুটি স্ক্যানার বসানো হবে সেই দুটি চলে এসেছে। এয়ারফ্রেইটে একটি স্ক্যানার এরইমধ্যে বসানো হয়েছে। সামনের সপ্তাহে কুরিয়ারেও আরেকটি স্ক্যানার বসবে। ফলে চোরাচালান, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি, আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য আনা এবং স্মাগলিং বন্ধ হবে। একই সাথে শাহজালালে দুটি স্ক্যানার বসানো হলে যাত্রী সেবার মান আরও বেড়ে যাবে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্ক্যানার স্মিথ ডিটেকশন হাই স্ক্যানার