Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৪৮ বছর পর রাজাকারের তালিকা কেন?— প্রশ্ন বিএনপির


১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:৪৬

ঢাকা: স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর রাজাকারের তালিকা তৈরির প্রয়োজন কেন পড়ল?—এ প্রশ্ন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে র‌্যালি উদ্বোধনের সময় তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এ র‌্যালি আয়োজন করে বিএনপি।

এর আগে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের নাম প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ওই তালিকায় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধারও নাম রয়েছে।

র‌্যালি উদ্বোধনের আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনারা পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন, তারা রাজাকারের তালিকা তৈরি করেছে। ঠিক ৪৮ বছর পরে কী প্রয়োজন হলো রাজাকারের তালিকা তৈরি করার? রাজাকারের তালিকায় অনেক ভুল আছে। কী কারণে ভুল? তারা ( সরকার) বলছে, এটা পাকিস্তানীদের তৈরি করা তালিকা।’

‘তাহলে পাকিস্তানীদের তৈরি করা তালিকা দিয়ে আপনি রাজাকারের তালিকা দেবেন। এটা দিয়ে আপনার তালিকা তো হবে না, এই দেশের তালিকা তো হবে না’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজাকারের তালিকা করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তাদের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক। তারা মুক্তিযুদ্ধকে একটা প্রোডাক্ট হিসেবে ব্যবহার করে। মুক্তিযুদ্ধ তাদের কাছে একটা প্রোডাক্ট। এই রাজাকারের তালিকা, মুক্তিযুদ্ধের তালিকা— এইসব তৈরি করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে, প্রকৃত রাজাকারদের বাদ দিয়ে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চায়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে, ক্ষোভ ও ব্যথা নিয়ে এই বিজয় র‌্যালিতে অংশ নিচ্ছি। আজকের র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল আমাদের নেত্রী— যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রমানের সহধর্মিণী এবং ১৯৭১ সালে যিনি পাক বাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছিলেন, নির্যাতিত হয়েছিলেন, সেই নেত্রীকে। কিন্তু আজকে যে সরকার, যারা সম্পূর্ণ জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে, তাদের চক্রান্তে সেই নেত্রী কারাগারে আবদ্ধ রয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বিজয়ের এই দিন সর্ব প্রথম স্মরণ করতে চায় জিয়াউর রহমানকে। কারণ, সেদিন তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে একটা হতাশ জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। যখন আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে গিয়েছিল, তখন তিনি সামনে এসে স্বাধীনতার ঘোষণা করে আমাদেরকে যুদ্ধে যেতে অনুপ্রাণিত করেছেন।’

শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আজকে স্মরণ করতে চাই, শ্রদ্ধা জানাতে চাই, আমাদের সেই সমস্ত যোদ্ধাদের। যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনেছেন। কিন্তু সেই স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর আমাদের কী দেখতে হচ্ছে? আমরা দেখছি যে, ১৯৭১ সালে যে চেতনা নিয়ে, যে আশা, যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা যুদ্ধে নেমেছিলাম, সেই আশা, সেই স্বপ্ন সব কিছু ভেঙে খান খান হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেন, যারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, যারা বাক স্বাধীনতার কথা বলেন, তাদেরকে আজকে কারাগারে যেতে হয়। এই মুহূর্তে হাজার হাজার নেতাকর্মী বন্দি রয়েছেন। লাখ লাখ দেশপ্রেমী মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।’

র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায় ও সেলিমা রহমান।

দলের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য শেষে বিকেল ৩ টার পর নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে থেকে বিজয় দিবসের বর্নাঢ্য র‌্যালি শুরু করে বিএনপি। র‌্যালির সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দুপুর ২ টায় র‌্যালি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১২ টার পরই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যানার, ফেস্টুন, বাদ্যযন্ত্র, পোস্টার, দলীয় প্রতীক, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত পোস্টার, বিলাশ আকৃতির পতাকা নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী পল্টন এলাকায় এসে হাজির হন। র‌্যালি শুরুর পর পল্টন, বিজয়গনর, কাকরাইল, শান্তিনগর এলাকায় সড়কের একপাশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। শত শত গাড়ির হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হন।

বিজ্ঞাপন

র‌্যালিটি নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মালিবাগ মোড় ঘুড়ে ফের নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালির সামনে-পেছনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই র‌্যালি শেষ হয়। বিজয় দিবস র‌্যালির পুরো সময়জুড়ে ছিল খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান।

বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর