Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মানবতাবিরোধী অপরাধীকে শহীদ বলা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়’


১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:১৭

ঢাকা: একজন মানবতাবিরোধী অপরাধীকে শহীদ বলে আখ্যা দেওয়া কোনোভাবেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়। বিচারে প্রমাণিত ও শাস্তি পাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধীকে শহীদ বলা দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদকের ধৃষ্টতা। এ ধরনের ধৃষ্টতাকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলা যায় না। আইনিভাবে এরকম কাজের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে সার্বিকভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় সরকারকে আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে।

বিজ্ঞাপন

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে সেমিনারটি আয়োজন করে আর্টিকেল নাইন্টিন। সেমিনার আয়োজনে সহযোগী ছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও ডেনমার্ক দূতাবাস।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভির ক্যারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর মিথিলা ফারজানার সঞ্চালনায় সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) চেয়ারম্যান আবেদ খান, জাতিসংঘ ঢাকার সিনিয়র হিউম্যান রাইটস অ্যাডভাইজার হিয়াইক অ্যালেফসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এবং ফোরাম ফর ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন বাংলাদেশের চেয়ারপারসন ড. সৈয়দা আইরিন জামান।

সেমিনারে অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আর্টিকেল নাইন্টিনের আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফয়সল এবং ডেনিস অ্যাম্বাসেডর উইনি স্ট্রাপ পিটারসন।

সেমিনারে আবেদ খান বলেন, সংগ্রাম সম্পাদক উসকানিমূলক কাজ করেছেন। সম্পাদক সম্পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করেছেন। ব্যক্তির দায়িত্বহীনতা রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ঢুকে যাওয়ার বিষয়টিও দুঃখজনক।

সিনিয়র এই সাংবাদিক আরও বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিষয়টি সামগ্রিকভাবে সারাবিশ্বে জটিল আকার ধারণ করেছে। এই উপমহাদেশের অবস্থা আরও খারাপ। সেই ধারাবাহিক প্রভাবের বাইরে আমরা নই। ভারতে যে ঘটনা ঘটেছে, তা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। কেন এরকম ঘটনা ঘটছে, এ বিষয়ে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ঢাবি অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধীকে শহীদ বলার মতো কোনো সংশয় কোনো বিবেকবান মানুষের থাকার সুযোগ নেই। আদালতের রায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধী প্রমাণিত হওয়ায় তাকে শহীদ আখ্যা দেওয়ার অধিকারও কারও নেই। এটা ধৃষ্টতামূলক। তবে পত্রিকা অফিস ভাঙচুর করাটা ঠিক হয়নি।

সেমিনারে নাসিমা বেগম বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়টি নিয়ে সরকার কাজ করছে। বুয়েটের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবরারকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়টি বহুল আলোচিত। কিন্তু যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল, তারা বুয়েটের আগে নটরডেম কলেজে লেখাপড়া করেছে। এরকম একটি প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা অর্জন করে তারা কেন এমন অমানবিক হলো, তা গবেষণার দাবি রাখে। পরিবার থেকেই মূল্যবোধ জাগ্রত হওয়া উচিত।

ফারুক ফয়সল বলেন, সরকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করার চেয়ে রাজাকারদের তালিকা করতেই বেশি আগ্রহী। সেটি করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম রাজাকারের তালিকায় ঢুকে যাওয়াটা ঠিক নয়।

আইনজীবী তানিয়া আমির বলেন, মানবাধিকার সার্বজনীন বিষয়। বাংলাদেশসহ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কম। ধর্মীয়, সামাজিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা ঝুঁকিপূর্ণ। যারা মত প্রকাশ করে, তারা দু’দিক থেকে সমস্যায় পড়েন। তাদের মত যাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তাদের দিক থেকে যেমন হুমকির মুখে থাকেন, তেমনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিক থেকেও সমস্যার মধ্যে থাকেন তারা।

আর্টিকেল নাইন্টিন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর