‘সমাজের শুভ পরিবর্তনের জন্য প্রান্তিক মানুষের পক্ষে থাকতে হবে’
১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৭:৫০
ঢাকা: রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ যখন প্রান্তিক মানুষের পক্ষে থাকে, তখনই সমাজের শুভ পরিবর্তন আসে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র যখন সমতার নীতি মেনে চলে, সব নাগরিককে সমানভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেয়, তখন রাষ্ট্র নিজেও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠে। সরকার এটি মেনে নিয়ে কাজ করলে কোনো সমস্যা থাকে না। কিন্তু অনেক সময়ই সরকার ও প্রশাসন তাদের দায়িত্ব ভুলে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে দলিত ও সমতলের আদিবাসীদের বঞ্চনাচিত্র ও আইনি সুরক্ষা বিষয়ক গবেষণাপত্র উপস্থাপনের এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সুলতানা কামাল। ন্যাশনাল অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্ম এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা আরও বলেন, দলিত ও সমতলের আদিবাসীরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানে পিছিয়ে আছেন। এমনকি তাদের মৌলিক মানবাধিকারও ঠিকমতো নিশ্চিত করা হচ্ছে না। এই বঞ্চনা ও পিছিয়ে রাখার মনোবৃত্তি জাতি হিসেবে আমাদের অগ্রগতির গতিধারাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আমরা যখন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এবং কাউকে পিছিয়ে রেখে নয়— এমন উন্নয়নের কথা বলছি, তখন এই মানুষগুলোর কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে।
সবার জন্য মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে বলেও সভায় মত দেন সুলতানা কামাল।
অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, দলিত ও সমতলের আদিবাসীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে শিক্ষায় ও চাকরিতে তাদের জন্য কোটার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের প্রতি সমাজের মানসিকতা বদলাতে হবে। পিছিয়ে থাকা এসব জনগোষ্ঠীর মানুষদের সহযোগিতা করার জন্য আইন তৈরি করতে হবে এবং সে আইনের প্রয়োগও করতে হবে।
সারাবাংলা ডটনেট ও জিটিভির এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, আমাদের দেশে কেন্দ্র ও প্রান্তের মধ্যে পার্থক্য বাড়ছে। সেক্ষেত্রে সমতলের আদিবাসীদের এখন প্রান্তিকেরও প্রান্তিক মনে করা হয়। এই দূরত্ব ঘোচাতে হবে।
এই সাংবাদিক নেতা বলেন, আমাদের দেশের শাসক বদলায় কিন্তু শাসন ব্যবস্থায় কোনো বদল আসে না। সবাই এসে আদিবাসীদের মুছে ফেলতে চায়। এমনকি মিডিয়াও তাদের অধিকারের প্রশ্নে কম সচেতন। তারা এখন মাস মিডিয়া থেকে ক্লাস মিডিয়া হয়ে গেছে! এই মনোবৃত্তি দূর করতে হবে।
সংসদ সদস্যরা উন্নয়নের নামে ঠিকাদারি করছেন অভিযোগ করে ইশতিয়াক রেজা বলেন, ব্যবসায়িক স্বার্থ না ভেবে সাধারণ মানুষের স্বার্থের কথা ভাবতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ে যারা রয়েছেন তাদের কাছে বেড়ে ওঠার সব সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে। সবার আগে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, দলিত নেত্রী বনানী বিশ্বাস, আদিবাসী নেতা উজ্জ্বল আজিমসহ আরও অনেকে।
আদিবাসী আদিবাসীদের অধিকার দলিত সুলতানা কামাল সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা