চবি সাংবাদিকতা বিভাগের রজতজয়ন্তী: সবুজ ক্যাম্পাসে প্রাণোচ্ছ্বাস
১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:৩৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ২৫ বছর পূর্তিতে আয়োজিত রজতজয়ন্তী উৎসবকে ঘিরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা বসেছিল। উৎসবে শামিল হতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করা সাবেক শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন পর এক হয়েছিলেন সবুজ ক্যাম্পাসে। আনন্দ আয়োজনে শামিল হয়েছিলেন বর্তমানরাও। সবার মধ্যেই ছিল প্রাণের উচ্ছ্বাস। হাসি, কথামালা, কখনও গলা ছেড়ে গান আর তুমুল আড্ডা, স্মৃতির ঝাঁপি খুলে দিয়ে দিনটি পার করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে বের হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। মূলত এর মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী উৎসবের সূচনা হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে এবং বেলুন উড়িয়ে রজতজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত উৎসবের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
মন্ত্রী বলেন, ‘সারাবিশ্বে সাংবাদিকতা একটি সম্মানজনক পেশা। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হচ্ছে গণমাধ্যমকে। গণমাধ্যম নিরপেক্ষ পর্যালোচনার মাধ্যমে তথ্য পরিবেশন করলে মানুষ সেটি জানার, শেখার এমনকি নিজেকে সংশোধনের সুযোগ পান। এর মাধ্যমে জনগণ ও রাষ্ট্র উপকৃত হয়। এ জন্য কর্মক্ষেত্রে একজন সাংবাদিককে সবসময় সাবধান থাকতে হবে। তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে।’
সাংবাদিকতা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই প্রজন্মের যারা আছেন, তাদের ওপর নানা ঘাত-প্রতিঘাত আসছে। এ সব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে।’
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাম্প্রতিক অবস্থা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা দেখে শঙ্কিত হই। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করুক, যেখানে পড়াশোনা হবে, গবেষণা হবে। বৃহৎ পরিকল্পনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে নিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ক্যাম্পাসে পড়াশোনা, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বিকাশের ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের সামান্য সম্পদ। এই সম্পদ দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশ্বমানের করতে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি রয়েছে। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়নের সুষম বন্টণ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা যদি পরিকল্পনা নিয়ে আসেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী অর্থ বরাদ্দ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘নানা ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি এসেছে। আমাদের তরুণ সমাজের ওপর নানারকম নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে। এমন প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে যেন বিশ্বের দরবারে কুণ্ঠিত হই। তাই আমরা আশা করব, শিক্ষার্থীরা যোগ্য ও দক্ষ মানবসম্পদে রুপান্তরিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
এর আগে উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘গত ২৫ বছরে সাংবাদিকতা বিভাগ অনেক এগিয়ে গেছে। বর্তমানে বিভাগে অত্যাধুনিক ল্যাব হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা নানাভাবে উপকৃত হচ্ছেন। বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের নানা জায়গায় সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন। ছাত্ররা যদি নিজেদের কর্মক্ষেত্র তৈরি করে নেয় সেটি আমাদের সকলের জন্য মঙ্গল। যে জাতি পরিশ্রমী সে জাতি উন্নতির সোপানে উঠবেই। ছাত্রদেরও পরিশ্রম করতে হবে।’
এতে আরও বক্তব্য রাখেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শিমুল নজরুল ও সাধারণ সম্পাদক হামিদ উল্লাহ।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর রেডিসন ব্লু চিটাগং বে ভিউতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে সাবেক শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ, আমন্ত্রিত অতিথিদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।