Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গঠনতন্ত্রে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির অঙ্গীকার আ. লীগের


২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:২০

ঢাকা: জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের অঙ্গীকারের পাশাপাশি এবার ‘মাদক’ শব্দটি গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত করে জিরো টলারেন্স নীতির অঙ্গীকার ঘোষণা করল আওয়ামী লীগ।

শনিবার (২১ডিসেম্বর) দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র সংশোধনী প্রস্তাবে কাউন্সিলরদের ভোটে ‘মাদক’ সংশোধনী প্রস্তাবে গৃহীত হয়।

বিজ্ঞাপন

কাউন্সিল অধিবেশনের সভাপতি আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা গঠনতন্ত্র সংশোধনী প্রস্তাবটি ভোটে দেন এবং কাউন্সিলররা সম্মতি জ্ঞাপন করেন। প্রস্তাবটি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রস্তাবে আমরা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের সঙ্গে ‘মাদক’ শব্দটাও যোগ করেছি।’

গঠনতন্ত্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে প্রস্তাবনার অঙ্গীকারে ২ নম্বর অনুচ্ছেদে (উপধারা-১০) উল্লেখ আছে, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ; জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন।’

গঠনতন্ত্রের অঙ্গীকারে উল্লেখ আছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্র, কর্মসূচি ও নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নে যথোচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। একটি উন্নত-সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রূপকল্প সংবলিত এই ঘোষণাপত্র ও কর্মসূচির মৌলিক লক্ষ্যও অঙ্গীকারের মধ্যে একটি অঙ্গীকার রয়েছে।

এছাড়াও গঠনতন্ত্রের ২(১৭) ধারায় উল্লেখ আছে, খাদ্যে আত্মনির্ভরশীলতার ধারা অব্যাহত রেখে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা তথা ভাতের অধিকার নিশ্চিত করা। কৃষিপণ্যের লাভজনক দামের নিশ্চিয়তা বিধান। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবনায় আমরা সংযোজন করেছি ‘পুষ্টিমান’। ধারাটি অব্যাহত রেখে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা তথা ভাতের অধিকার ও পুষ্টিমাণ নিশ্চিত করা, কৃষিপণ্যের লাভজনক দামের নিশ্চয়তা বিধান করা।’

বিজ্ঞাপন

প্রস্তাবটি অনুমোদনের ব্যাখ্যা তুলে ধরে কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমরা এখন খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এখন আমরা পুষ্টিমানটা এর সঙ্গে যুক্ত করলাম। আমরা জনগণের পুষ্টিমান নিশ্চয়তা দিতে চাই।’

এছাড়াও ৫ (১ক) আগের ধারাটি বহাল রেখে কেবলামত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কথাটি সংযোজন করা হয়েছে। ২০২০ সালের ৩৩ শতাংশ কোটা প্রতিশ্রুতির বিষয়টি সংশোধনী তুলে ধরার আগে বলেন, ‘যেহেতু এটা ২০২০ সালে বলা আছে। আমরা এটাকে ২০২১সাল পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাচ্ছি। সংগঠনের সর্বোচ্চ মহিলা প্রতিনিধিত্ব আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ক্রমান্বয়ে পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহীসহ সকল স্তরের কমিটিতে যেন ৩৩ শতাংশ পদ নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।’

সংশোধনী অনুমোদনের জন্য ভোটে দিলে উপস্থিত নারী নেত্রীরা বেশী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী হাস্যরসে বলেন, ‘খালি মহিলারা হাত দেখাচ্ছে কেন? ছেলেরা কই? ছেলেরা যদি ভোট না দেন বাড়িতে ভাত পাবেন না।’

২৪ (ক) ধারায় ৫০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে যেকোনো ব্যয় অনুমোদন করার বিষয়টি এখন থেকে এক লাখ টাকার ঊর্ধ্বে অনুমোদন করা হয়। এছাড়াও ৫১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক পদটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। তার বদলে বিভাগীয় উপ-কমিটি কমিটি গঠন দলীয় গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়। ২৫.১ (চ) ধারাটি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটার জন্য নতুন যে প্রস্তাবনা নেওয়া হয়েছে এবং সংশোধিত আকারে বিভাগীয় উপ-কমিটির প্রস্তাব করা হয়েছে তা দলের কার্যক্রম গতিশীল করবে। উপ-কমিটির একজন চেয়ারম্যান, একজন সম্পাদক ও বিশেষজ্ঞ সদস্য, সংশ্লিষ্ট সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্যের সমন্বয়ে গঠন হবে। জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সদস্য যারা বিভিন্ন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, তারা পদাধিকার বলে সংশ্লিষ্ট বিষয়সম্পর্কিত উপ-কমিটির সদস্য হবেন।’

২৫.২(ক) ধারায় সহযোগী সংগঠন হিসেবে নতুন করে মৎস্যজীবী লীগ অন্তুর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়াও ‘আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ’ এই দুটোকে একীভূত করে ‘বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ’ নামে সেটাকে দলে সম্পৃক্ত করা হয়।’

এছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্ঠাপরিষদের সদস্য সংখ্যার আকার বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরে ২৬.২(গ) অনুযায়ী সংগঠনের জেলা, মহানগর, উপজেলা/থানা. ইউনিয়ন পর্যায়েও কেন্দ্রের মতোই উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী মহানগর, জেলা, উপজেলায় উপদেষ্টা পরিষদ ২৭ সদস্য বিশিষ্ট এবং থানায় ২১ ও ইউনিয়নে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হবে।

এছাড়াও ৬২(ক) ধারায় কোনো স্তরেই আহ্বায়ক বা এডহক কমিটির মেয়াদ কোনোভাবেই ছয় মাসের বেশি স্থায়ী হবে না। এবং এডহক কমিটির সদস্য সংখ্যা মূল কমিটির সদস্যের চেয়ে বেশি হবে না বলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই সাথে দলের ফরমে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। ১৪৫ নম্বর পৃষ্ঠায় নাম, মাতা-পিতার/স্বামীর নাম, পেশা, বয়স, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মোবাইল নম্বর ও ই-মেইল যোগ করার নিয়ম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।’

গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র সংশোধনী শেষে আগের কমিটির বিলুপ্তি ঘোষণা করে কাউন্সিলর সারিতে আসন গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। এরপর কাউন্সিল অধিবেশন পরিচালনার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশনার মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন।

আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র জিরো টলারেন্স নীতি মাদক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর