স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে বিএনপি
২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:৪৬
ঢাকা: আগামী বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আগামী বছর স্বাধীনতার অর্ধশত বর্ষ। এই অর্ধশত বার্ষিকী বিএনপি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্যে একটি উপ-কমিটি গঠন করেছে। এই উপ-কমিটি সারা বছর ধরে কর্মসূচির পরিকল্পনা এবং সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।’ উপ-কমিটির প্রধান করা হয়েছে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। সদস্যরা হলেন- গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান— জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর উল্লেখ করে ফখরুল জানান, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ‘কার্যকর আন্দোলন’ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে।’
ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদের মৃত্যুতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গভীর শোক প্রকাশ করে তার পরিবার ও ব্র্যাক পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। একই সঙ্গে জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবীর মুরাদের মৃত্যুতেও শোক প্রকাশ করা হয় বৈঠকে— জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আগামী ৩০ ডিসেম্বর সেই কলঙ্কজনক নির্বাচন, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় একটি কলঙ্ক বলে আমরা মনে করি। সেই দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যথাযোগ্য গুরুত্বের সঙ্গে দিনটি পালন করবার জন্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় জোট ও বিএনপি তাদের কর্মসূচি দেবে।’
মির্জা ফখরুল জানান, রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দেওয়ায় গাম্বিয়া, নেদারল্যান্ড ও কানাডাকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দেবে বিএনপি। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আদালতে এই মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষা করছে। যেহেতু গাম্বিয়া এই মামলাকে আন্তর্জাতিক আদালতে তুলে নিয়ে এসেছে। গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করেছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস। সেজন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে পত্র দেওয়া হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে যে, বাংলাদেশের এই মামলায় কোনো ভূমিকাই ছিলো না।’ আসামের এনআরসি নিয়ে দলের অবস্থান জানিয়ে আগামীকাল রোববার বিকালে বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করবে বলেও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত
জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের যে নতুন নেতৃত্ব আনা হয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা যেহেতু একটি রাজনৈতিক দল, আমরা সব রাজনৈতিক দলকে সব সময় সহযোগিতা করি, স্বাগত জানাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করবো এই কার্যকরী পরিষদ তাদের অতীতের অপকর্মগুলোকে ভুলে জনগণের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে তারা অতিদ্রুত একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। যে নির্বাচনটি একটি নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচাললায় অনুষ্ঠিত হবে এবং মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে।’
আওয়ামী লীগের অতীত কর্মকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি পুরনো ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল এবং নিঃসন্দেহে এই জাতি গঠনে, জাতির স্বাধীনতা লাভে এবং গণতন্ত্রের সংগ্রামে অতীতে অনেক গৌরবময় অধ্যায় তাদের রয়েছে, ইতিহাস রয়েছে।’
স্থায়ী কমিটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
স্কাইপেতে যুক্ত হয়ে বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।