কুয়াশা-সূর্যের লুকোচুরি, উষ্ণতার অপেক্ষা কাটেনি রাজশাহীবাসীর
২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:২৭
রাজশাহী: টানা দুই দিন পেরিয়ে তৃতীয় দিনে এসে মেঘের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়েছে সূর্য। তবে কুয়াশার দাপটে তার তেজ নেই মোটেই। আবার শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা কমলেও তা থেমে যায়নি একেবারে। ফলে এখনো উষ্ণতার উত্তাপের অপেক্ষার অবসান হয়নি রাজশাহীবাসীর। এদিকে, টানা কুয়াশার কারণে বীজতলা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন- শৈত্যপ্রবাহে সারাদেশে নিস্তেজ জনজীবন
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোরের দিকে রাজশাহী নগরে ঘন কুয়াশা থাকলেও সকালে দুই দিনের বিরতির পর দেখা মেলে সূর্যের। তবে কুয়াশার সঙ্গে লুকোচুরি থাকায় সে সূর্য পূর্ণ উত্তাপ ছড়াতে পারেনি। তারপরও তাপমাত্রা খানিকটা বেড়েছে। রোববার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি থাকলেও সোমবার সকালেই তা বেড়ে হয়েছে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে পুরোপুরি থামেনি শৈত্যপ্রবাহ। ফলে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও কমেনি শীতের দাপট। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস আশা করছে, মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
শীতের দাপট অব্যাহত থাকায় এখনো নগরীর পোশাকের দোকানগুলোতে রয়েছে ভিড়। গরম কাপড়ের বিকিকিনি চলছে বেশ। বিশেষ করে হাত মোজা ও পা মোজার চাহিদাই যেন সবচেয়ে বেশি। কেবল দোকান নয়, ভ্যানে করেও চলছে গরম কাপড় বিক্রি। ইলেকট্রিক জগ আর চায়ের দোকানগুলোও বেশ জমজমাট। তবে সন্ধ্যার পরপরই ফাঁকা হয়ে পড়ছে দোকানপাট, রাস্তাঘাট। খুব একটা প্রয়োজন না পড়লে ঘর থেকেও বের হচ্ছেন না কেউ।
শীতের কারণে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে হাসপাতালে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা গত কয়েকদিনে বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
রাজশাহীর আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বলেন, কুয়াশাছন্ন আকাশ আর রোদের তাপ না থাকার কারণে শীতের তীব্রতা রয়েছে। সঙ্গে মৃদু শৈত্যপ্রবাহও রয়েছে বলে ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। শনিবারের তুলনায় রোববার তাপমাত্রা কমেছিল। তবে সোমবার বেড়েছে। মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা আরও কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বীজতলা নিয়ে শঙ্কা
এদিকে, কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন কৃষকরা। কুয়াশা থেকে বাঁচাতে বীজতলা ঢেকে রেখেছেন পলিথিন দিয়ে। কৃষকরা বলছেন, দ্রুত কুয়াশা না কাটলে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আবাদও পিছিয়ে যাবে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সোনাদিঘী এলাকার এলাকার বোরো চাষি আব্দুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, এ বছর ১২ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করবেন তিনি। সে লক্ষ্যেই বীজতলা তৈরি করেছেন তিনি। কিন্তু ঘন কুয়াশায় ‘কোল্ড ইনজুরি’র আশঙ্কায় বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেছেন তিনি।
আব্দুর রহমান বলেন, আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না। তবে একটানা কুয়াশা থাকলে বীজতলা নষ্ট হবে। তখন হয় অন্য কোথাও থেকে ধানের চারা কিনে আবাদ করতে হবে, নয়তো আবারও বীজতলা তৈরি করে আবাদ করতে হবে। এমনটি হলে আবাদের খরচ বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক শামছুল হক সারাবাংলাকে বলেন, বোরো ধানের বীজতলা যেন কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত না হয়, সেজন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি আমরা। তারা সে অনুযায়ী কাজও করছেন। আশা করা যায়, সব বীজতলা ঠিক থাকবে। বোরো’র পাশাপাশি অন্যান্য রবি ফসল রক্ষার জন্যও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন। ফসল নিরাপদ রাখতে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।