বেড়েছে শিশু ধর্ষণের হার, আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান
২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:২৪
ঢাকা: চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে সারাদেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯০২ জন শিশু। অথচ ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫৭১ জন। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এ বছর দেশে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ৫৯ শতাংশ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) আয়োজিত এক সংলাপে এসব তথ্য জানানো হয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সম্মেলন কক্ষে ‘চাই শিশুর নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা’ শীর্ষক এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।
এএসডির মূল প্রবন্ধে বলা হয়, গত দুই বছরের প্রথম ১০ মাসের ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এ বছর শিশু হত্যা, ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, গৃহকর্মী শিশুর উপর অত্যাচার ও নবজাতক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধারের সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে ধর্ষণের ঘটনার হার বেশি।
সংলাপের আলোচনায় উঠে আসে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার কথা। বক্তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রণয়ন করা ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের কথা উল্লেখ করেন। তারা বলেন, দেশে আইন থাকলেও এর প্রয়োগ নেই। তাই সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে মনিটরিং জোরদার করার আহ্বান জানান তারা।
সংলাপের প্রধান অতিথি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগমও আইনের বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন। তবে তিনি বলেন, শিশু অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি অনেক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের উজ্জল ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে স্বাধীন দেশে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার বিভিন্ন কর্মসূচী পরিচালনা করছে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
এএসডি’র নির্বাহী পরিচালক জামিল এইচ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংলাপে বক্তব্য দেন বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। এদের মধ্যে ছিলেন উৎস বাংলাদেশের মো. শফিকুল ইসলাম, এসওএস শিশু পল্লীর আজিজুর রহমান, এএসডি’র নির্বাহী সদস্য এ কে এম সাইফুজ্জামান।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এএসডি’র প্রজেক্ট ম্যানেজার ইউকেএম ফারহানা সুলতানা।
সংলাপ থেকে উঠে আসে বেশ কিছু সুপারিশ। সেখানে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘কোন শিশু পথে থাকবে না’ বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সব মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে শিশুশ্রম বন্ধ ও শিক্ষার হার বাড়াতে আইনের প্রণয়ন করতে হবে। শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থাগুলোর মধ্যে তথ্য সরবরাহ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে।