Friday 11 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে বড়দিন: সম্প্রীতি আর শান্তির বাংলাদেশ গড়ার প্রার্থনা


২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:১১ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:২৭
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম ব্যুরো: খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিনের সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটার রাণী জপমালা গির্জায় এক হয়েছিলেন সব ধর্ম আর মতের অনুসারীরা। সমবেতদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় সব ধর্মীয় আর জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শান্তির বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাথলিক আর্চডায়োসিসের আর্চবিশপ মজেস এম কস্তা।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর পাথরঘাটার আর্চবিশপ ভবনে বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের আয়োজন করা হয়। এসময় বিশিষ্টজনদের নিয়ে কেক কাটেন বিশপ মজেস কস্তা। তার সঙ্গে ছিলেন ক্যাথিড্রাল গির্জার পাল-পুরোহিত ফাদার সুব্রত বনিফাস টলেন্টিনু।

বিজ্ঞাপন

শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, নারীনেত্রী নূরজাহান খান, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. আব্দুল আলীম, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তারেক সোলায়মান সেলিম, জহরলাল হাজারী, ইসমাইল হোসেন বালি ও হাসান মুরাদ বিপ্লব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জীনবোধি ভিক্ষু, কারিতাস চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক জেমস গোমেজ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা তাপস হোড়, শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি আমজাদ হোসেনসহ বিশিষ্ট নাগরিক ও শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা।

শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে আর্চবিশপ মজেস কস্তা বলেন, ‘আজকের শুভদিনে আমরা প্রার্থনা করছি, ঈশ্বর যেন আমাদের সুন্দর পথ দেখান। তিনি যেন আমাদের জীবনের পথনির্দেশনা অবশ্যই দেন। প্রভু যিশু ছিলেন মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের পরম উপহার। আমরা আজ উন্নত, শান্তিময় বাংলাদেশের জন্য প্রার্থনা করছি। এই দেশের জন্য যেন ঈশ্বরের আর্শীবাদ নেমে আসে। দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় এবং জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি বজায় থাকুক, এটা আমরা কামনা করি। সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশ যেন হয় শান্তির বাংলাদেশ, এই কামনা করি। আমরা সবাই মিলে যেন মানুষ ও মানবতা বোধের জন্য কাজ করি।’

বড়দিন উপলক্ষে গির্জাকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বাইরেও অনেকে বড়দিন পালনে গির্জায় হাজির হন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সম্প্রদায়ের পক্ষে প্রতিনিধিরা গিয়ে বিশপকে ফুল দিয়ে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানান।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে ও বুধবার সকালে নগরীর বিভিন্ন গির্জায় বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। শান্তির বার্তা পরিবার থেকে সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার আকুতি জানিয়ে প্রার্থনায় শরিক হন এই সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ। নারী-পুরুষ, শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ অভিন্ন কণ্ঠে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনায় মিলিত হন।

মঙ্গলবার রাত ৯টায় নগরীর পাথরঘাটা জপমালা রাণী গির্জায় মূল প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এসময় বাংলায় এই প্রার্থনায় পৌরহিত্য করেন জপমালা রাণী গির্জার পাল পুরোহিত ফাদার সুব্রত বনিফাস।

রাত ১২টা ১ মিনিটে একই গির্জায় ইংরেজিতে আরও একটি প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। এতে পৌরহিত্য করেন চট্টগ্রাম আর্চডায়োসিসের আর্চবিশপ মজেস কস্তা সিএসসি।

বুধবার সকাল ৮টায় একই গির্জায় আরও এক দফা সম্মিলিত প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। এতেও পৌরহিত্য করবেন আর্চবিশপ মজেস কস্তা।

এদিকে নগরী ও জেলায় ১৪টি গির্জায় বুধবার বড়দিনের প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। বড়দিন উপলক্ষে গির্জাগুলো বর্ণিল আলোয় ভরে উঠেছে। গোশালা স্থাপন, রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে ক্রিসমাস ট্রিসহ নানা আয়োজনে সাজানো হয়েছে।

বড়দিন উপলক্ষে নগরীর তারকা হোটেলগুলোতে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। নগরীর হোটেল রেডিসন ব্লু, বে ভিউ, পেনিনসুলা, আগ্রাবাদ ও ওয়েল পার্ক রেসিডেন্সিয়াল হোটেলের লবি সাজানো হয়েছে বর্ণাঢ্য সাজে।

নগরীর গির্জাগুলোতে বড়দিন উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন। তিনি বলেন, মূল গির্জাসহ আশপাশের এলাকায় শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর বাইরে সাদা পোশাকে পুলিশও আছে। বিভিন্ন গির্জায় সিসিটিভি বসানো হয়েছে।

আর্চবিশপ মজেস এম কস্তা ফাদার সুব্রত বনিফাস টলেন্টিনু বড়দিন রাণী জপমালা গির্জা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর