Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গরম কাপড় নেই, মেঝেতে বসেই রাত কেটেছে পোড়া বস্তিবাসীর


২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:১৪

ঢাকা: সারাদিনের কাজের ক্লান্তি শেষে ঘুমাতে যাওয়ার মুহূর্তেই দাউ দাউ আগুন ছড়িয়ে পড়ে মিরপুরের কালশী বেড়িবাঁধ বস্তিতে। সেই সময় এক কাপড়েই সবাইকে বের হতে হয়েছে। আগুনে সব পুড়ে ছাই হওয়ার পর এখন শীতেও কাঁপছেন বস্তিবাসীরা।

বাউনিয়া বাঁধ এলাকার আনন্দ নিকেতন মডেল স্কুলে আশ্রয় নেওয়া আয়েশা বেগম বলেন, আমরা কোলের বাচ্চা নিয়ে এক কাপড়ে বেরিয়েছি। কেউ কোনো কাপড়-চোপড়, জিনিসপত্র কিছুই বের করতে পারিনি। রাতে যে যার গায়ের গরম কাপড় খুলে রেখে ঘুমাইছি। তাই আগুন লাগার সময় সেগুলো নিয়েও বের হতে পারিনি। এখন যেখানে আশ্রয় নিয়েছি এখানে তো অনেক শীত আর ঠান্ডা। না পারতেছি বসতে, না পারতেছি শুইতে। জায়গা না হয় একটু পেলাম, এ শীতের মধ্যে কিভাবে রাত কাটাব?

২৬ ডিসেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে আগুনে পুঁড়ে ছাই হয়েছে কালশীর বেধিবাঁধ বস্তি। তাই বস্তির বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছে ওই স্কুলে। আয়েশাও সেই আশ্রিতদের একজন।

আয়েশা বেগম সারাবাংলাকে আরও বলেন, স্কুলের মেঝে যে ঠান্ডা, তার ওপর প্রচণ্ড শীতে না পারছি বসতে না পারছি ঘুমাতে। বাচ্চাটাকেও কোল থেকে নামাতে পারছি না। নামালেও তো ঠান্ডা লেগে যাবে। আবার সকাল থেকে সবাইকে খিচুড়ি খাইয়েছে। কিন্তু ঝাল দেখে বাচ্চা খিচুড়ি খায় না। বুকের দুধ খাইয়ে কতক্ষণ রাখব। এখন পর্যন্ত কেউ একটু সাহায্যও করলো না।

জয়নব নামের আরেকজন বলেন, আগুন লাগার পর এমপি ইলিয়াস মোল্লা এসে কিছু কম্বল দিয়ে গেছে। কিন্তু অনেকে পাইছে আবার অনেকে পায়নি। আবার যে কম্বল দিয়েছে, তা এত পাতলা যে শীত ঠেকানো যায় না। কি করব, বুঝতে পারছি না।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির তিনটি কক্ষের প্রতিটিতে ১৫-২০ টি করে পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তবে বিদ্যালয়টি পাকা হওয়ায় ফ্লোরও ভীষণ ঠাণ্ডা। আর এ ঠান্ডার মধ্যে কোনো রকমে পাটি বিছিয়ে কেউ কেউ বসে আছে। তবে কাউকে ঘুমাতে দেখা যায়নি। তারা জানায়, মেঝে প্রচণ্ড ঠান্ডা হওয়ায় কোনোমতে বসে থেকে নির্ঘুম রাত পার করেছে তারা।

জামাল উদ্দিন নামের এক বস্তিবাসী সারাবাংলাকে বলেন, আমরা গরীব হলেও কাল পর্যন্ত একটু হলেও শান্তিতে ঘুমাতে পারছি। অথচ আজ গায়ে দেওয়ার মতো কাপড়ও নেই। আমরা তো কারও কাছে হাতও পাততে পারি না। কই যামু, কী করমু কিছুই বুঝতে পারছি না। এ কথা বলেই গুমরে কেঁদে ফেলেন তিনি।

শুধু অনুরোধের সুরে জামালউদ্দিন বললেন, ‘আমরাও মানুষ। যত আগুন সব আমাদের ঘরেই লাগে। এ শীতের মধ্য সব পুঁড়ে ছাই হয়ে গেল। তবে সরকার যেন আমাদের বেঁচে থাকার কথাও একটু ভাবে সেটা একটু লিখবেন মামা।’

তবে সেখানকার আশ্রিত বস্তিবাসীর সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার নির্দেশে কাজ করছেন একদল যুবক। তাদের একজন ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগকর্মী মো. মনির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, রাতে এমপি সাহেব নিজে এসেছেন। সবাইকে কম্বল দিয়েছেন। আবার সকালে আমাদেরকে দিয়ে লুঙ্গি-শাড়ি পাঠিয়েছেন। সবাইকে দিয়েছি। সকালে প্রায় আড়াইশ লোককে খিচুড়ি খাইয়েছি। দুপুরেও খাবারের আয়োজন চলছে।

কালশী বস্তি পুঁড়ে ছাই টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

আইভরি কোস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৪০

সম্পর্কিত খবর