সংকট উত্তরণে আন্দোলনের বিকল্প নেই: ফখরুল
২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:০৭
ঢাকা: বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে দেওয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাসদ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার মূল চেতনাকে গড়ে তোলার জন্য। সেই লড়াই জাসদ এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর এসেও আমাদের বলতে হচ্ছে যে, আমরা গণতন্ত্র ফেরত চাই। বর্তমান যে রাজনৈতিক সংকট চলছে, সেই সংকট সমাধানের জন্য জনগণের অভ্যুত্থান বা জনগণের আন্দোলন ছাড়া কখনোই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়া আইনত জামিন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু তাকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আজকে যারা জোর করে ক্ষমতায় বসেছে, তারা জানে খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে তাদের যে রাজনৈতিক নীলনকশা সেটা তারা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না।’
আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসে জনগণের আশা আকাঙ্খা ও স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যে স্বপ্ন দেখেছিলাম আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব। আমাদের গণতান্ত্রিক মুক্তি আসবে। আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে। আমরা একটা স্বাধীন মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস গ্রহণ করতে পারব। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এই আওয়ামী লীগ সরকার সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘১৯৭৫ সালে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল আওয়ামী লীগ। সেদিন তারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে মানুষের অধিকার হরণ করে নিয়েছিল। এখন আবার তারা ভিন্ন আঙ্গিকে ভিন্ন মুখোশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। আমাদের সংবিধান, আমাদের যে শাসনতন্ত্র ভেঙে চুরে খানখান করে দিয়েছে।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পটভূমি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আশা নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলাম। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের সংগ্রাম জয় করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা পারিনি। তবে আমাদের পারতে হবে, আমাদের আরও বৃহত্তর ঐক্য তৈরি করতে হবে। শুধু ঐক্যফ্রন্ট এবং অন্যান্য জোট নয়, দেশের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জেল মুক্ত করতে হবে।’
জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মোহসীন রশিদ, বিকল্প ধারার মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জেএসডির যুগ্ম-সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন ও বিকল্প ধারার সভাপতি নুরল আমীন বেপারী।