Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পঞ্চাশ বছর হতে চলল, এবার জনগণ হোক দেশের মালিক: ড. কামাল


২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:১৩

ঢাকা: স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে জনগণকেই দেশের মালিক হিসেবে দেখতে চান সংবিধান প্রণেতা গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ প্রত্যাশা জানান।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘এটা আমাদের বিজয়ের মাস। এই বিজয়ের মাসে সবার সঙ্গে আমি উৎসাহিত হয়ে বলব, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর তো হতে চলছে। এইবার আসুন, যে জিনিসটা আমাদের পাওয়ার কথা, কিন্তু বঞ্চিত করা হয়েছে যে, জনগণকে সত্যিকার অর্থে রাষ্ট্রের মালিক হিসেবে দেখতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সত্যিকার মালিক হই, তাহলে আমাদের মাথা কেনার মতো কেউ আছে বলে মনে করি না। আমাদের মাথা কেনার মতো টাকা কারও নেই। আর টাকা থাকলেও কেউ আমাদের মাথা কিনতে পারবে না। কারণ, বাঙালির মাথা কেউ কিনতে পারে না। কিছু লোককে কায়দা করে স্বল্প সময়ের জন্য বাগে নিতে পারে, কিন্তু ধরে রাখতে পারে না।’

‘কিন্ত এই কথাগুলো কেবল মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললে হবে না। আমাদের লোক সংখ্যা তো কোটি, কোটি। এখানের কথা পাড়া-মহল্লায় পৌঁছাতে হবে, ইউনিয়নে পৌঁছাতে, উপজেলায় পৌঁছাতে হবে, জেলায় জেলায় পৌঁছাতে হবে। এই কাজটা করার জন্য সঙ্গে সঙ্গে নেমে পড়তে হবে’— বলেন ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘সারাদেশ থেকে এখানে ডেলিগেটসরা আসছেন। ফিরে গিয়ে বসে থাকলে চলবে না। একেবারে প্রত্যেক ইউনিয়নে মিটিং করেন। উপজেলায় মিটিং করেন। জেলায় জেলায় মিটিং করেন। মহুকুমায় মিটিং করেন। মানুষকে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি মালিকের ভূমিকায় আছেন? যে জন্য দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেটা কি হচ্ছে, দেশে সুশাসন কি হচ্ছে? অর্থনীতি কি ঠিকমতো চলছে?

বিজ্ঞাপন

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘তারা (সরকার) এতো উন্নয়ন উন্নয়ন যে করে কিন্তু এই উন্নয়ন করতে গিয়ে কত টাকা বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, কত টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। আমরা আইয়ুব খানের সময় দেখেছি, তারা উন্নয়নের বক্তব্য দিয়ে দিয়ে, আবার তাদের পতনও দেখেছি। অর্থাৎ উন্নয়নের বক্তব্য দিতে দিতে যে পতন হয়, সেটার তো সব চেয়ে বড় উদাহরণ আইয়ুব খান।’

‘তবে এতো কিছুর পরও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের রফতানি বাড়ছে। আর এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে আমাদের কৃষক। তারা কিছু না পেয়েও দেশের জন্য যা দেওয়ার, তা মুক্ত হস্তে দিয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের গার্মেন্ট! এক সময় বিদেশিরা শঙ্কা জানিয়ে বলেছিল যে, মুসলিম প্রধান একটি দেশের মেয়েরা আমাদের গ্রাম থেকে এসে গার্মেন্টসে কাজ করবে? এখন সেই গার্মেন্টস সারা পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। অর্থাৎ আমরা পারি’— বলেন ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘সুতরাং স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও যে জিনিসটি এখনো আমরা পাইনি। যেমন শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না ? দলীয়করণ। এটা আমাদের বড় রোগ। যেসব শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, তাদের মানের ভিত্তিতে নয়, দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হয়।’

জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড আব্দুল মঈন খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মোহসীন রশিদ, বিকল্প ধারার মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জেএসডির যুগ্ম-সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন ও বিকল্প ধারার সভাপতি নুরল আমীন বেপারীসহ অনেকেই।

বিজ্ঞাপন

গণফোরাম টপ নিউজ ড. কামাল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর