নীতি নির্ধারক ও গবেষকদের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি
৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ২২:৩৩
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
নীতি নির্ধারক ও গবেষকদের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি থাকায় তারা বোঝেন না— কাদের দিয়ে গবেষণা করাবেন ও কাদের জন্য গবেষণা করবেন। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে উভয় দিক থেকেই সমন্বয় সাধন করতে হবে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-র উদ্যোগে দুদিনব্যাপী বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তাদের বক্তব্যে এ বিষয়টি ফুটে ওঠে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর লেকসোর হোটেলে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে ড. রেহমান সোবহান বলেন, ‘নীতি নির্ধারক ও গবেষক উভয় দিক থেকেই ঘাটতি রয়েছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে এ ঘাটতি পূরণ করতে হবে। আমি যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ছিলাম তখন ২৯টি টাস্কফোর্স গঠন করে বিভিন্ন খাতে গবেষণা পরিচালনা করেছিলাম। কিন্তু নির্বাচিত সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এলেও নীতি নির্ধারকরা এটি কাজে লাগাতে পারেননি।’
তিনি আরও বলেন, “অনেক সময়ই দেখা যায়, নীতি নির্ধারকদের গবেষণা নিয়ে আগ্রহ কম থাকে। আবার গবেষকদের খেয়াল রাখতে হবে শুধু ‘পলিসিনির্ভর গবেষণা’ গবেষণার বৃহত্তর ক্ষেত্রকে যাতে সংকুচিত না করে।”
ওই সম্মেলনে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের লিড ইকনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘নীতি নির্ধারক ও গবেষক উভয়ের মধ্যেই ভিন্ন মনোভঙ্গী রয়েছে। নীতি নির্ধারকরা মনে করেন গবেষকরা অতিরঞ্জিত কথা-বার্তা বলেন। আবার গবেষকরা মনে করেন নীতি নির্ধারকরা গবেষণাকে গুরুত্ব দেন না। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশে বাজেট, মুদ্রানীতি বা যেকোনো আর্থিক নির্ধারণের আগে ব্যাপক আলাপ আলোচনা হয়। কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ে এসব কথাবার্তার প্রভাব কম থাকে।’
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গর্ভানেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড.সুলতান হাফিজ রহমান বলেন, ‘নীতি নির্ধারকদের মনোভাবে পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। আমাদের মনে রাখতে হবে, বেসরকারি খাত এগিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়েও গবেষণা দরকার। তবে আশার কথা, বাংলাদেশে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাড়ছে।’
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, ‘গবেষণার ঘাটতিপূরণে ঢাকা চেম্বার কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই বাজার সংক্রান্ত বেশ কিছু গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে, যা ব্যবসা বাড়াতে কাজে লাগছে।’
রাজধানীর লেকসোর হোটেল দুইদিনব্যাপী ওই সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান প্রফেসর রেহমান সোবহান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্স কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. রাণী বনিক এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর সেলিম রশিদ প্রমুখ।
দুদিনব্যাপী এ গবেষণা সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে মোট ২১টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন ও সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
সারাবাংলা/জেজে/এমআই