ঢাকা-সিলেট সড়ক চার লেন প্রকল্পের বাধা কাটছে, ২০২০-এ টেন্ডার
৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:৩০
ঢাকা: অর্থায়ন জটিলতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়ন এতদিন ঝুলে থাকলেও অবশেষে বাধা কাটছে। মহাসড়কটির উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ফলে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর মনে করছে আগামী বছরের মাঝামাঝি সড়কটি উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে জানান, প্রকল্পের ডিপিপি বা ডকুমেন্টেশন প্রণয়নের জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে। পাঁচ মাসের মধ্যে তারা এটি প্রস্তুত করবে। জানুয়ারি মাসেই সেটি হাতে পাবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। এখন ভূমি অধিগ্রহণ ও সমীক্ষার কাজ চলমান রয়েছে।
কোথাও কোথাও জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও জমি অধিগ্রহণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। আগামী বছরেই এটি টেন্ডার প্রক্রিয়ার মধ্যে যাবে বলে জানান সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। এ মহাসড়ক আন্তর্জাতিক রুট হিসেবেও পরিচিত। সড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানো ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতে দুই লেনের মহাসড়কটি চার লেন করার স্বপ্ন দেখানো হয় প্রায় এক যুগ আগে। সড়কটি চার লেন করার প্রতিশ্রুতি থাকলেও নানা জটিলতায় গত দুই মেয়াদে সরকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হলেও তা বাতিল করা হয়।
অবশেষে প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। আগামী বছরের মাঝামাঝিতে সড়কের কাজ শুরু হতে পারে বলে মনে করছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।
সরেজমিনে সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সড়কটির ২২৬ কিলোমিটারের মধ্যে বেশকিছু জায়গা ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। কোথাও কোথায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে। মহাসড়কে থাকা কয়েকটি সেতুও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় এই প্রকল্পকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করছে। এতে আর কোনো দেরি হবে না। খুব তাড়াতাড়ি দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
এদিকে সড়কটির ভূমি অধিগ্রহণে পৃথক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ এবং ইউটিলিটি স্থানান্তরের জন্য তিন হাজার ৮৮৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে সড়ক বিভাগের। এরমধ্যে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮৫১ কোটি টাকা।
প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা-সিলেট চার লেনের পাশাপাশি ধীরগতির যানবাহন চলার জন্য দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয় লেন আকারে হবে সড়কটি। ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ২২৬ কিলোমিটার সড়ক দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করা হবে। এই চার লেনের দুইপাশে আলাদা সার্ভিস লেন থাকবে। যেখানে ‘স্লোমুভিং’ যানবাহন চলাচল করবে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার দাবি ২০০৪ সাল থেকে। সিলেটে গিয়ে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও সরকারের গেল দুই মেয়াদে কাজ শুরু করতে পারেনি সড়ক বিভাগ। অর্থায়ন জটিলতায় এটি এতদিন ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল।
প্রকল্প অনুযায়ী, ২২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সোয়া চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৭০টি সেতু নির্মাণ করা হবে। চার হাজার ৩৫৮ মিটার দীর্ঘ চারটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে ভৈরব, সিলেটের গোয়ালাবাজার, তাজপুর ও দয়ামীর বাজার এলাকায়। নরসিংদী, ভৈরব, ওলিপুর, লস্করপুর ও সিলেটে নির্মাণ করা হবে রেল ওভারপাস। এ মহাসড়ক হবে এশিয়ান হাইওয়ে-১ এবং এশিয়ান হাইওয়ে-২-এর অংশ।
এডিবি চার লেন প্রকল্প ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সড়ক উন্নয়ন সড়ক ও জনপথ