‘শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি কোনোক্রমেই বরদাস্ত করা হবে না’
২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:৪৮
ঢাকা: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো ক্রমেই বিন্দুমাত্র দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারদের সঙ্গে ‘দুর্নীতিমুক্ত সরকারি সেবা: দুর্নীতির অভিযোগের প্রকৃতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি কোনোক্রমেই বরদাস্ত করা হবে না। কেন না উপযুক্ত শিক্ষাই তরুণ প্রজন্মকে একটি সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দিতে পারে এবং তাদের মধ্যে নৈতিকতা সৃষ্টি করতে পারে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে আইন-শৃঙ্খলা মেনে চলার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য পুলিশ বিভাগের প্রতিনিধিদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া ফলপ্রসূ হতে পারে মর্মে উল্লেখ করেন। কমিশন শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন একটি শক্তিশালী আইন। তবে এই আইনটি সম্পর্কে হয়তো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সঠিকভাবে অবহিত নন। এই আইনটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে দুর্নীতি করার দুঃসাহস কেউ দেখাবে না। দুর্নীতি ও দারিদ্র মানব সভ্যতার শুরু থেকেই বিদ্যমান ছিল। দারিদ্রের সঙ্গে দুর্নীতিরও সর্ম্পক রয়েছে। দারিদ্র এবং দুর্নীতিকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা হয়তো সম্ভব নয়। তবে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সরকারি পরিষেবা প্রদানে দুর্নীতি, হয়রানি এবং দীর্ঘ সূত্রিতার নানা অভিযোগ কমিশনে আসে। বিগত দুই বছরে কমিশনের হটলাইনসহ অন্যান্য মাধ্যমে প্রায় ৪০ লাখ অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে এসেছে। এত অভিযোগ কিসের ইঙ্গিত বহন করে? আমাদের মনে হয়, সরকারি পরিষেবা প্রদানে কোথাও না কোথাও সরকারি কর্মকর্তাদের গাফিলতি, অপারগতা বা অক্ষমতা রয়েছে। এট সহ্য করা হবে না। আমরা সবাই জনগণের করের অর্থে বেতন পাই, তাদের সেবা প্রদান করা আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এটা আমরা সবাই মনে রাখবো।’
কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সকলে আইন মেনে চললে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের সুযোগ নেই। কেন না আইন তৈরি করা হয় মানার জন্য, প্রয়োগের জন্য নয়। নৈতিকতাবিহীন উন্নয়ন কখনই টেকসই হতে পারে না। আমরা উন্নয়ন চাই, দারিদ্র বিমোচন চাই, তবে তা হতে দুর্নীতিমুক্ত।’
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতির অনেক কারণ রয়েছে, তবে সরকারি কর্মকর্তাদের চেয়ারপ্রীতিও দুর্নীতির অন্যতম কারণ। সরকারি কর্মকর্তাদের মনে রাখতে হবে, দুর্নীতি একটি ফৌজধারী অপরাধ এবং ফৌজধারী অপরাধ কখনই তামাদি হয় না। দেশটি আমার এই কথা আমাদের সকলের হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।
স্থানীয় জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন-এর সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা শিশু কর্মকর্তাসহ অনেকে।