Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপির সমাবেশ হচ্ছে না, রাজধানীতে বিক্ষোভ মঙ্গলবার


৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১১:৫৯

ঢাকা: রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আজ দুপুর ২ টায় সমাবেশ করার কথা থাকলেও তা করছে না বিএনপি। এর পরিবর্তে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর থানা পর্যায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে সমাবেশ করতে চেয়েছিল বিএনপি।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২টায় প্রতিবাদ সমাবেশ করা হবে। এছাড়া ঢাকাসহ সারা দেশের নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের দলীয় কার্যালয়গুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।

এদিকে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বিএনপিকে অনুমতি দেয়নি। এ বিষয়ে সোমবার নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বিএনপি কর্মদিবসে রাস্তা বন্ধ রেখে সমাবেশ করতে চেয়েছিল। আমরা সেই সমাবেশের অনুমতি দিইনি।’

সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ সেই দিন, যেদিন আওয়ামী লীগ রাতের আঁধারে জনগণের ভোট ডাকাতি করে স্বাধীনতার চেতনা, ত্রিশ লাখ শহীদ, আর দুলই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের সাথে বেইমানি করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূলমন্ত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা  শুরু করেছে স্বাধীনতার পরপরই। শেখ হাসিনা সেটাকে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ও তার আগের রাতে ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে পুনরায় ‘৭৫ এর একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ভিন্ন মডেলে কায়েম করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে গত বছরের এই দিনগুলোর কথা। একাদশ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর থেকে সরকার শুরু করেছিল দেশব্যাপী সর্বগ্রাসী গায়েবি মামলা আর গ্রেফতারের হিড়িক। কবরের লাশ থেকে শুরু করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী, হজব্রত পালনরত অবস্থায় মক্কায় অবস্থানকারী, দীর্ঘদিন প্রবাসে অবস্থানকারী ব্যক্তি কেউ-ই বাদ যায়নি সেইসব গায়েবি মামলা থেকে।’

তিনি বলেন, ‘স্ত্রীর কাছ থেকে স্বামীকে, মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে, সন্তানের কাছ থেকে পিতাকে ছিনিয়ে নিয়ে কারাগারগুলো ভরে ফেলা হয়। তারপরও বিরোধী দলের যেসব নেতাকর্মী অবশিষ্ট ছিল তাদের ওপর চলে ভয়াভয় নির্যাতন, তাদেরকে আক্রমণের মাধ্যমে এলাকা ছাড়া করা হয়। বিএনপি প্রার্থীদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হয়নি।’

রিজভী বলেন, ‘তালিকা ধরে ধরে এজেন্টদের এলাকাছাড়া করা হয়েছে, এক এলাকা থেকে ধরে আরেক এলাকায় ফেলে রাখা হয়েছে। এরপরেও যারা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সাহস দেখিয়েছেন তাদেরকে আটক করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বাছাই করে দলীয় ক্যাডারদের। আর ২৯ ডিসেম্বর রাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং প্রশাসনের লোকেরা রাতভর ব্যালটবাক্স পূর্ণ করে। আওয়ামী লীগ ছাড়া ভোটের দিন যারাই কেন্দ্রে যাবার চেষ্টা করেছে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকেও বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বাধা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমাদের পূর্বঘোষিত সমাবেশের কর্মসূচিকে বানচাল করতে পোশাক ও সাদা পোশাকে পুলিশ সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশের সড়ক এবং অলিগলিতে অবস্থান নিয়ে যুদ্ধংদেহী পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে গোটা নয়াপল্টন এলাকায়।’

বিজ্ঞাপন

পুরোদেশটা আওয়ামী লীগের তালুকদারীতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘যখন তখন যেকোন সময় আওয়ামী লীগ যেকোন স্থানে সভা-সমাবেশ করতে পারে। অথচ বিরোধী দল ও ভিন্ন মতের মানুষদের সেই অধিকার নেই। এদেশে শুধুমাত্র একজনেরই গণতান্ত্রিক অধিকার আছে তিনি হলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে এক ব্যক্তিকেন্দ্রীক গণতন্ত্র চলছে। একমাত্র শেখ হাসিনার কন্ঠস্বরের স্বাধীনতাই রয়েছে চরম পর্যায়ে। আর শেখ হাসিনার এই দু:শাসনে বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও ভিন্নমতের মানুষরা সাবহিউম্যান পর্যায়ে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

৩০ ডিসেম্বর নয়াপল্টন বিএনপি সমাবেশ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর