চলনবিলে বেড়েছে পাখি শিকারিদের দৌরাত্ম্য
৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১১:৪৭
সিরাজগঞ্জ: প্রতিবছরের শীতকালে রঙ-বেরঙের নানা প্রজাতির অতিথি পাখির কলকাকলিতে ভরে উঠে পুরো চলনবিল। এই সময়টাতেই এসব পাখি শিকারে নামে একশ্রেণির অসাধু চক্র। আর স্থানীয় হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে এসব পাখির মাংস।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের প্রয়োগ না থাকায় প্রতিবছর এই মৌসুমে পাখি শিকারিদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। যদিও বনবিভাগের দাবি তারা নিয়মিতই অভিযান চালাচ্ছেন। চলনবিল এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারিও।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলনবিলের বিস্তীর্ণ মাঠ, নদী, পুকুর, খাল, ডোবা, নালায় উড়ে বেড়াচ্ছে অতিথি পাখির ঝাঁক। পাখির চঞ্চল উড়াউড়ি ও তাদের হাঁক-ডাকে মুখরিত বেশিরভাগ এলাকা। এসব পাখির মধ্যে আছে- রাত চরা, বালিহাঁস, শামুকখোল, নীলশির, লালশির, বড় সরালী, ছোট সরালী, সাদা বক, ধূসর বক, গো বক, ছোট পানকৌড়ি, বড় পানকৌড়ি, কাদা খোঁচা, মাছরাঙ্গা ও সারস।
স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেন জানান, চলনবিল থেকে পানি নেমে যাওয়ার সময় জলাশয়গুলোতে পুঁটি, খলসে, দারকিনাসহ প্রচুর পরিমাণে ছোট মাছ ও কীট-পতঙ্গ পাওয়া যায়। খাবারের লোভে প্রতিবছর শীত মৌসুমে ঝাঁকে-ঝাঁকে অতিথি পাখি তাই চলনবিল এলাকায় আসে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পাখি ব্যবসায়ী জানান, এই সময় তার মতো অনেকেই রাতের অন্ধকারে রাত চোড়া, কাদা খোঁচা, বালিহাঁসসহ নানা প্রকার অতিথি পাখি শিকার করেন। অনেকেই দিনের বেলায় ফসলের মাঠে সারি সারি ফাঁদ পেতে বিভিন্ন প্রজাতির বক শিকার করেন। এসব পাখি শিকারের ক্ষেত্রে তেমন বিধি-নিষেধ নেই বলেও জানান তিনি।
বলেন, এখানকার মানুষের কাছে পাখির মাংসের খুব চাহিদা। আর বেশিরভাগ পাখিই স্থানীয় হাট-বাজারে প্রকাশ্যেও বিক্রিও করেন তারা।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, আমরা বিষয়টি মনিটরিংয়ে রেখেছি। প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণের স্বার্থে চলনবিল এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
এই বন কর্মকর্তা বলেন, অতিথি পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে তাড়াশ, চাটমোহর, সিংড়া, গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে মাঝে-মধ্যেই ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের লোকবল সংকট আছে।