Thursday 26 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রায়ের বিরুদ্ধে আজ খালেদা জিয়ার আপিল


২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৯:১২

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হবে আজ।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের সেকশনে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব  উদ্দিন খোকন।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর গতকাল সোমবার রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এরপর রাতেই আপিলের সার্বিক প্রস্তুতির জন্য বৈঠকে বসেন সিনিয়র আইনজীবীরা।

আপিলের জন্য এরই মধ্যে মামলার ওকালতনামায়ও সই করেছেন নাজিমুদ্দীন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি খালেদা জিয়া। গত শুক্রবার তার সই করা ওকালতনামার কপি সংশ্নিষ্ট আইনজীবীদের কাছে হস্তান্তর করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, প্রথমে উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করা হবে। সেটি গৃহীত হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনও চাওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে বেশ কিছু গ্রাউন্ডও তৈরি করে রেখেছেন তারা।

সম্ভাব্য যুক্তি হিসেবে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী যদি বিশ্বাস ভেঙে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে তাদের দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় বিচার করা হয়। কিন্তু  বাদীপক্ষ থেকেও বলা হয়নি আত্মসাৎ করার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সরকারি অর্থ।  এই মামলায় কোনো অর্থই আত্মসাৎ হয়নি বলেও দাবি করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

রায়ে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ এর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আসামিপক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে বর্তমানে ওই অর্থ ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে এবং তা সুদে-আসলে বেড়ে ছয় কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সুতরাং আত্মসাৎ এর প্রশ্নই আসে না!

বিজ্ঞাপন

এটি একটি ট্রাস্ট ফান্ডের টাকা, স্বীকৃত মতে একটি বৈধ ট্রাস্ট্রের নামেই টাকাটা ছিল। অর্থাৎ ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ যে কোনোভাবে এই টাকা ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু যদি সেটি আত্মসাৎ হয়, সেক্ষেত্রে অন্যকথা, এখানে আত্মসাৎ হয়নি। কোনো অনিয়ম যদি হয়েও থাকে তাহলে তার বিচার হবে ১৮৮২ সালের ট্রাস্ট আইনে। এখানে দুর্নীতি দমন কমিশনের ভূমিকা নেই। এসবের পাশাপাশি আরও অনেক যুক্তি দেখিয়ে তারা আপিল করবেন বলে জানা গেছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাচঁ বছর কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান।

রায়ের পরই তাকে ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানে কারাবন্দি রয়েছেন।

৬৩২ পৃষ্ঠার রায়ে বলা হয়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসিকিউশনপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় তাকে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারায় পাচঁ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড।  এবং আসামি তারেক রহমান (পলাতক), কাজী সালিমুল হক ওরফে কাজী কামাল, শরফুদ্দীন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী (পলাতক), মমিনুর রহমান(পলাতক) এর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় প্রত্যেককে দণ্ড বিধির ৪০৯/১০৯ ধারায় ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং সবাইকে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত করা হলো।  উক্ত অর্থ দণ্ডের টাকা সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ কর্তৃক প্রত্যেককে সম অংক প্রদান করতে হবে। আরোপিত অর্থ দণ্ডের টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত বলে গণ্য হবে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। মামলায় খালেদা জিয়াসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। এরপর ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট এ মামলার অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত কর্মকর্তা। তাতে সাক্ষী করা হয় ৩২জনকে। পরে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ৮ ফেব্রুয়ারি আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেডকে/টিএম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ইউনিয়ন পরিষদ বাতিলের আহ্বান বিএনপির
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৪৫

সম্পর্কিত খবর