Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাড়ি ফেরার বায়না মুক্তামনির, দেখতে চায় প্রধানমন্ত্রীকে


৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৯:৪৫

জাকিয়া আহমেদ

এ মাসেই বাড়ি ফিরছে মুক্তামনি। টানা ৫ মাস হাসপাতালে কাটানো মুক্তামনিকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন। তবে বাড়ি যাওয়ার আগে মুক্তামনি তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একবার দেখার আকুতি জানিয়েছে।

সারাবাংলাকে মুক্তামনি বলে, আমি হাসপাতালে আসার পর আমার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আমি তাকে দেখতে চাই। আমাকে ডাক্তাররা বলেছিল, তোমাকে যেদিন ছুটি দেব তার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেব। আমারও খুব আশা, তার সঙ্গে যদি একবার দেখা করতে পারতাম।

এর আগে  গত ১২ জুলাই ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে  ভর্তি করা হয় মুক্তাকে। প্রথমদিকে রোগটিকে বিরল রোগ বলা হলেও  বায়োপসি করে জানা যায় মুক্তামনির রক্তনালীতে টিউমার আছে, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞনের ভাষার হেমানজিওমা বলা হয়।

গত ১২ আগস্ট  ঢামেক হাসপাতালের একদল চিকিৎসক মুক্তামনির হাতে প্রথম অস্ত্রোপচার করেন। এরপর একে একে ছয়টি অস্ত্রোপচার করে হাত থেকে ফেলা দেওয়া হয় অতিরিক্ত মাংসপিণ্ড।

ডা. সামন্ত লাল সেন সারাবাংলাকে বলেন, মুক্তামনির বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচারের পর তার হাতের টিউমার পুরোপুরি সরাতে পেরেছি। পুরো হাতে চামড়া লাগানোর কাজও শেষ, আশা করছি কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই হাতে চামড়া লেগে যাবে।

তবে বর্তমানে হাতে কিছুটা ফোলা ভাব  আছে যা  ‘প্রেসার ব্যান্ডেজ’ দিয়ে কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আরও দিন সাতেক  হাসপাতালে  পর্যবেক্ষণে রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এ মাসের মাঝামাঝিতে  তাকে আমরা ছেড়ে দেব। মুক্তামনি নিজেও বাড়ি যাবার বায়না করছে।  তবে সে এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ নয় জানিয়ে বর্ষীয়ান এ চিকিৎসক বলেন, মুক্তার শরীরের ভেতরে রোগটা রয়ে গেছে। পরবর্তীতে সে গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরে এলে তার চিকিৎসা আবার শুরু করব।

বিজ্ঞাপন

একইসঙ্গে মুক্তামনির হাতের অতিরিক্ত মাংসপিণ্ড  অপসারণ করা হলেও মাথা, পা’সহ শরীরের অন্যান্য স্থান এখনো  আক্রান্ত। সেসব জায়গায় চিকিৎসা শুরু করতে হবে বলেন ডা. সামন্ত লাল সেন।

মুক্তামনি তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডা. সামন্ত লাল সেন, বার্ন ইউনিটের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালামসহ প্রতিটি চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলে, তাদেরকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। তারা আমার জন্য এত চেষ্টা করেছেন, আমার হাত ভালো করতে চেয়েছেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন এত মানুষের চেষ্টা, শ্রম বৃথা না যায়।

অপরদিকে, মুক্তামনির মা আসমা খাতুন সারাবাংলাকে বলেন, মেয়েটাকে নিয়ে কত কষ্ট করলাম। আর শুধু আমরা নই, এখানকার চিকিৎসকরা যা করেছেন তার কোনো তুলনা হতে পারে না। মেয়ের হাত নিয়ে যা হলো গত কয় মাসে, সেটা আমাদের কাছে একটা যুদ্ধের মতো।  আর এখন ভালো করার মালিক আল্লাহ। সবার কাছে দোয়া চাই, আমার মেয়েটার হাতটা যেন ভালো হয়ে যায়।

সারাবাংলা/জেএ/একে/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর