‘লক্ষ্য— জাতির পিতার দেওয়া স্বাধীনতাকে আরও অর্থবহ করব’
৩ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:১০
ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, সেই স্বাধীনতাকে আরও অর্থবহ করে তোলাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আজ আমাদের একটাই প্রতিজ্ঞা হবে— আমরা নবনির্বাচিত কমিটি (২১তম কাউন্সিলে গঠিত আওয়ামী লীগের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি) নব উদ্যমে জাতির পিতার দেওয়া স্বাধীনতাকে আরও অর্থবহ করে দেশকে আরও উন্নত করব। বাংলাদেশের মানুষ এখন বিশ্বে যে মর্যাদা পেয়েছে, এর চেয়েও আরও বেশি মর্যাদা নিয়ে যেন চলতে পারে— সেটাই আমাদের লক্ষ্য। তাই ২০২০ সালটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূচনা বক্তব্যের পর যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এরই মধ্যে বৈঠকটি মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে মুলতবি বৈঠকটি।
আরও পড়ুন- রাজনীতির স্মার্টনেস আওয়ামী লীগই দেখিয়েছে: শেখ হাসিনা
যৌথ সভার সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এটা মনে রাখতে হবে, ২০২০ সাল বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এই বছরেই রয়েছে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী। ১৯২০ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার জন্ম না হলে বাংলাদেশ কোনোদিন স্বাধীন হতো না— এটিই বাস্তবতা। মনে হয় যেন তার জন্মই হয়েছিল বাঙালি জাতিকে আত্মপরিচয় দেওয়া, মর্য়াদা দেওয়া এবং একটি রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য। সে কারণে আমাদের জন্য এই বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটকে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ায় জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশের জনগণ আমাদের ২০১৮ সালের ভোটে নির্বাচিত করেছে। আমরা সরকারে আসতে পেরেছি। আর সে কারণেই রাষ্ট্রীয়ভাবে ২০২০ সালকে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি। পাশাপাশি ২০২১ সালে রয়েছে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। আমাদের একটি বড় সৌভাগ্য, ১৯৯৭ সালে আমরা স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী উদযাপন করতে পেরেছিলাম, তখনো আওয়ামী লীগ সরকারে ছিল। আবার সুবর্ণ জয়ন্তীটাও উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি। সেজন্য আমরা জাতির কাছে কৃতজ্ঞ। আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর দেশের জনগণের এই আস্থা-বিশ্বাস না থাকলে আমরা এগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করার সুযোগ পেতাম না। জানি না তখন কী হতো! কারণ এই নামটা তো মুছে ফেলার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। কাজেই যেটা আমরা করতে পারব, সেটা আমাদের সবথেকে বড় শক্তি। আমাদের এখনে সেভাবে কাজ করতে হবে। আমরা কমিটি করেছি, বিভিন্ন প্রোগ্রাম নিয়েছি। এখন সেই প্রোগ্রামগুলো একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
‘আগামী ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তার স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। সেই দিনটি থেকে আমরা মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন শুরু করব। ১৭ মার্চ শুরু করব জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান। এই আয়োজন চলবে বছরব্যাপী। সারাবছরই আমরা সারাদেশেই অনুষ্ঠান করব। বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসসহ প্রবাসী এবং দেশের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান কিছু না কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করে মুজিববর্ষ উদযাপন করবে বলেও জানান তিনি।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী যথাযথ মযর্দার সঙ্গে পালনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যেন আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে এবং আওয়ামী লীগ যেন ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ, তথা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারে— সবাইকে সেই প্রতিজ্ঞা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সূচনা বক্তব্য শেষ করেন শেখ হাসিনা।
এরপর দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যম নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের অংশগ্রহণে রুদ্ধদার যৌথ সভা শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সভা পরিচালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।