‘জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আমাদের কোনো পথ থাকবে না’
৩ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:০৯
ঢাকা: আন্দোলন করতে না পারলে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া বিএনপির কোনো পথ থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার হরণ এবং খালেদা জিয়ার জামিন প্রতিহিংসার বিচারে অবরুদ্ধ’ শীর্ষ এ আলোচনা সভা আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী তাঁতীদল।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আন্দোলন ছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি অথবা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। অনেকেই মনে করেন একটু সফট হলে কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বার বার আমরা দেখতে পাচ্ছি সেটি সম্ভব নয়। এই সরকারের হাত-পা বাঁধা, তারা পারবে না কোনো কিছু করতে।’
‘আমাদের জন্য একটাই পথ। সেটি হচ্ছে আন্দোলন। সেটি যদি আমরা করতে পারি তাহলে সফল হব। আর করতে না পারলে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আমাদের কোনো পথ থাকবে না। কিন্তু আমি মনে করি আমরা ব্যর্থ হতে পারি, এদেশের জনগণ ব্যর্থ হবে না। কারণ, এদেশের মানুষ দেশপ্রেমিক, গণতন্ত্রপ্রিয়’— বলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
তিনি বলেন, ‘জনগণকে আমরা আশ্বস্ত করতে পারি- এবার আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ থেকে বাড়িতে ফিরে যাব না।’
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘সিটি নির্বাচন লোক দেখানো নির্বাচন। নির্বাচন সামনে রেখে একদিকে গ্রেফতার আতঙ্ক চলছে। অন্যদিকে চলছে নির্বাচনি প্রচারণা । এই নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রহসন ছাড়া কিছু নয়।’
‘তারপরও এই নির্বাচনে আমরা অংশ গ্রহণ করছি। কারণ, আমরা জনমুখী একটি রাজনৈতিক দল। আমরা মনে করি, যদি মানুষ ভোট দিতে পারে, তাহলে ধানের শীষের প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জিতেব। কিন্তু সেটা তারা (সরকার) হতে দেবে না। গণতন্ত্রের যে মৃত্যু ঘটেছে এই দেশে, সেটা এই নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হবে’— বলেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।
ভারতের এনআরসি ও সিএএ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত সরকারের নাগরিক অধিকার আইনে সবচেয়ে বড় ভিকটিম হবে বাংলাদেশ। যারা বহু বছর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে গেছেন, ভারতের নাগরিক হয়েছেন, ভোটার হয়েছেন, ভোট দিয়েছেন, আজকে তাদেরকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আমাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়।’
আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এখন এক বাক্যে এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। মানুষ চায় সরকার পতনের জন্য বিরোধীদল আন্দোলন করুক।’
রাজনৈতিক আন্দোলন শিল্পের মতো মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের বোঝা দরকার, কখন-কোথায়-কীভাবে আন্দোলন শুরু করবেন। যারা আন্দোলন গড়ে তুলবেন, তাদের সামগ্রিক বিষয়টা বুঝতে হবে। তা না হলে হবে না। যারা ক্ষমতায় আছেন তারা কিন্তু বিষয়টা বোঝে।’
সরকারের উদ্দেশে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বিজিবি মহাপরিচালক বলেছেন- ওরা সবাই বাংলাদেশী, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। যেহেতু এখন স্বীকার করেছেন, ওখান থেকে ওরা আসছে। আমি জানতে চাই মোট কতজন বাংলাদেশে ঢুকেছে? এরা কবে ভারতে গিয়েছিল, এখন ঢুকল কেন? তারা এখন কোথায় আছে?
তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক, তাঁতী দলের যুগ্ম আহবায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।