খালেদা জিয়ার অস্তিত্ব সরকারের জন্য বিপজ্জনক: রিজভী
৩ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:২৫
ঢাকা: কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার অস্তিত্ব বর্তমান সরকারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, “বেগম জিয়ার অস্তিত্বই যেন সরকারের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক। কারণ, বেগম জিয়া সবচেয়ে জনপ্রিয় ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীন। সরকারের অবৈধ কর্মকাণ্ড যতই বৃদ্ধি পাচ্ছে ততই বেগম জিয়া ও গণতন্ত্রের প্রতি তাদের ভয় বাড়ছে। তাই ‘মিডনাইট’ নির্বাচনের পর বেগম জিয়ার প্রতি তাদের আগ্রাসী অসহিষ্ণুতা প্রবল হয়ে উঠেছে।”
প্রায় ৩১ দিন পর গত ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে বিএনপিনেতা বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১৯ দিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরও দেশনেত্রীর নিকট স্বজনদের সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ করার পরও অনুমতি মিলছে না।’
সরকারের নেক নজরে থাকার জন্য কারাকর্তৃপক্ষ দেশনেত্রীর আত্মীয়স্বজনদের দেখা করতে দিচ্ছেন না উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘এটি কর্তৃত্ববাদী শাসনের চরম বহিঃপ্রকাশ। এই সরকার আইন, আদালত ও বিচারাঙ্গনকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে খালেদা জিয়ার ন্যায়বিচার পাবার অধিকার হরণ করেছে এবং নানা কায়দায় নির্যাতনের বিভীষিকা অব্যাহত রেখেছে।’
কারাবন্দি বেগম জিয়ার সঙ্গে পরিবার-পরিজনদের দেখা করতে না দেওয়া কারাবিধির চরম লঙ্ঘন দাবি করে তিনি বলেন, ‘এটি একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসনের চরম নজীর। গত ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯, দেশনেত্রীর আপন বোন বেগম সেলিমা ইসলাম, পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান, নাতনি জাহিয়া রহমান, আরিবা ইসলাম, নাতি শামীন ইসলাম ও রাখীন ইসলাকে দেশনেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য কারাকর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু কারাকর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কর্ণপাত করেনি।’
রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রীর প্রতি সরকারের এই আচরণ শুধু দেশি নয়, আন্তর্জাতিক আইনেরও লংঘন। এমনিতেই তিনি গুরুতর অসুস্থ। এই মুহূর্তে নিকটজনেরা তার সঙ্গে দেখা করলে তিনি মানসিক শান্তি পাবেন। অথচ অগণতান্ত্রিক সরকার মানসিক শান্তির সেই সুযোগটুকুও বেগম জিয়াকে দিতে চায় না।’
সরকার খালেদা জিয়ার মানবাধিকার কেড়ে নিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রীর নামে মামলা এবং সাজা দেওয়া সম্পূর্ণরুপে প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ। সাজা দেওয়ার জন্য দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্জন ও অস্বাস্থ্যকর কীটপতঙ্গ ভরা কারাকক্ষে থাকতে বাধ্য করে এবং তার পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে ধীরে ধীরে তাকে নিঃশেষ করা।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনে উপদেষ্টা আবদুস সালাম, শাহিদা রফিকসহ অন্যরা।