অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলায় ৪ জনকে বহিষ্কার, ৭ ছাত্রকে টিসি
৩ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৩৪
রাজশাহী: রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে লাঞ্ছিত এবং পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থীকে বহিস্কারসহ ১৬ ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ।
তিনি জানান, পুকুরে ফেলার ঘটনায় চারজনের ছাত্রত্ব বাতিল, পাঁচজনের সনদ আটক ও সাতজনকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) থেকে ছাত্রত্ব বাতিল ও সনদ আটকে রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর হলেও বদলির সিদ্ধান্ত আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
জানা যায়, গত বুধবার (১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত হাতে পান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক পরিষদ। এরপর বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) এ বিষয়ে নিজেদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সবার সম্মতিক্রমে থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও সনদ আটকের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।
এছাড়া যাদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাদের পরীক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বদলির আদেশ কার্যকর করা হবে। তবে সভা শেষে তাদের নামে টিসি ইস্যু করা হয়েছে বলে জানান অধ্যক্ষ।
সূত্র জানায়, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সুপারিশে জড়িত ৪ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার, ৫ শিক্ষার্থীর মূল সনদপত্র আগামী তিন বছর আটকে রাখা ও ৭ শিক্ষার্থীকে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) দিয়ে অন্য কোনো ইন্সটিটিউটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলায় ছাত্রত্ব বাতিল-রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত
তদন্ত কমিটির এই সুপারিশ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ডে পাঠানো হয়েছিল। কারিগরি বোর্ড গত ১৫ ডিসেম্বরের সভায় এ সুপারিশ অনুমোদন এবং দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন বোর্ডের চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন মোল্লা। এই সভায় ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকায় একাডেমিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ২০১০ ও ২০১৬ প্রবিধানের নিবন্ধনের ৩.২ ধারা অনুযায়ী সভায় সর্বসম্মতিক্রমে চার ছাত্রের নিবন্ধন বাতিল (ছাত্রত্ব) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইভাবে শেষ পর্বের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকায় পাঁচ ছাত্রের সনদ তিন বছরের জন্য জব্দ করার সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া ঘটনার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার দায়ে সাত শিক্ষার্থীকে অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলি করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিসহ ১৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, মিডটার্মে ফেল এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা ২ শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে অধ্যক্ষকে চাপ দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে গত ২ নভেম্বর কার্যালয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরে ওই দিন দুপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার পর টেনে-হিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
অধ্যক্ষ পুকুরে অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন টপ নিউজ রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট