বাংলাদেশে ইয়াবা পাচারে ঘানার দুই নাগরিক, গ্রেফতার ৩
৪ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:০৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ইয়াবাসহ ঘানার দুই নাগরিক এবং একজন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। ঘানার দুই যুবকের কাছ থেকে সাড়ে সাত হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গ্রেফতারের পর তিনজন নিজেদের ফুটবলার দাবি করলেও পুলিশ জানিয়েছে, তাদের এই পরিচয় সঠিক কিনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) গভীর রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরী ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ।
গ্রেফতার তিনজনের মধ্যে আছেন- ঘানার নাগরিক ফ্রাঙ্ক এনটিম টিউম (৪০) ও রিচার্ড ডিজেফা এপিয়া (২৮) এবং বাংলাদেশি মো. মাসুদ (২৪)।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে জানান, গত (শুক্রবার) রাত দেড়টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় বাস থেকে নামার পর ফ্রাঙ্ক ও রিচার্ডকে গ্রেফতার করা হয়। তারা কক্সবাজার থেকে ঢাকা অভিমুখী একটি বাসের যাত্রী ছিলেন। তাদের কাছে থাকা দুটি লাগেজে ইয়াবাভর্তি কয়েকটি প্যাকেট পাওয়া যায়, যাতে সাড়ে সাত হাজার ইয়াবা ছিল। এই দুজনের তথ্য দেন যে, তারা ইয়াবাগুলো নিয়ে ঢাকায় জনৈক মাসুদের কাছে যাচ্ছিল। এই তথ্যের ভিত্তিতে তাদের নিয়ে ঢাকায় যায় বাকলিয়া থানা পুলিশের টিম।
ঢাকায় মাসুদকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতে পুলিশ। তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ইয়াবাগুলো হস্তান্তরের জন্য মাসুদকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আনা হয়। শনিবার দুপুরে মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর তিনজনকে নিয়ে পুলিশের টিম আবার বাকলিয়া থানায় ফেরত এসেছে বলে জানান ওসি নেজাম।
এডিসি রউফ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘানার দুই নাগরিক জানিয়েছেন, তারা ফুটবল খেলোয়াড়। বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্লাব ও লীগের হয়ে তারা নিয়মিত খেলায় অংশ নেন। গত সপ্তাহে তারা কক্সবাজারে ফুটবল খেলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে খেলা পরিত্যক্ত হওয়ায় তারা চট্টগ্রামে ফিরে আসছিলেন। তাদের পূর্বপরিচিত কুমিল্লার মাসুদের পরামর্শে ইয়াবা নিয়ে আসছিল তাকে দেবার জন্য। মাসুদও নিজেকে ফুটবলার হিসেবে পরিচয় দিয়েছে।’
তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ঘানার দুই নাগরিক জানিয়েছেন, তারা কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। ঢাকার ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি-ব্লকের ১৫ নম্বর সড়কের ১২/কিউ নম্বর বাড়িতে তারা বসবাস করেন। মাসুদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার চক্রতলা গ্রামে। বাসা গাজীপুর জেলার টঙ্গী উপজেলার মধুমিতা রোডে।
ঘানার দুই নাগরিকের বাংলাদেশে অবস্থানের জন্য বৈধ ভিসা আছে কি-না এবং তিনজন আদৌ ফুটবলার কি-না সেটা যাচাইবাছাই করে দেখা হচ্ছে বলে জানান এডিসি রউফ।
বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ মঈন উদ্দীন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, গ্রেফতারের পর মাসুদ জানিয়েছে- কক্সবাজারের জনৈক সাঈদের কাছ থেকে ঘানার দুই নাগরিকের মাধ্যমে ইয়াবাগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। গ্রেফতার তিনজনের সঙ্গে সাঈদকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
শনিবার রাতে গ্রেফতার তিনজনকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম খায়রুল আমীনের আদালতে হাজির করা হয়। ঘানার দুই নাগরিক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মাসুদকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হয়। আদালত চারদিন মঞ্জুর করেছেন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।