সৌদি আরবে পুলিশি অভিযান অব্যাহত, ৪দিনে দেশে ফিরেছে ৩১৭ শ্রমিক
৫ জানুয়ারি ২০২০ ২২:৩৬
ঢাকা: ২০২০ সালের প্রথম মাসেই সৌদি আরবে শুরু হয়েছে পুলিশি অভিযান। আর অভিযানে আটক ৩১৭ শ্রমিককে গত চারদিনে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫ জন নারী শ্রমিক রয়েছেন। রোববার (৫ জানুয়ারি) বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন প্রোগ্রাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাত ১১ টা ২০ মিনিটে ও রাত দেড়টায় সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ ও এসভি ৮০২ দুটি বিমানযোগে দেশে ফিরেছে ১০৬ জন শ্রমিক। আর রোববার দুপুরে ফেরে আরও ৭০ জন। এছাড়া আগের দুদিনেও ১৪১ শ্রমিক দেশে ফিরেছে। গত চারদিনে দেশে ফেরা শ্রমিকের সংখ্যা ৩১৭ জন। এছাড়া রোববার রাতে আরও শতাধিক প্রবাসী শ্রমিকের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
দেশে ফিরে আসা ৪০ বছর বয়সী শহিদ মিয়া জানান, আড়াই বছর আগে সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ করে টাইলস ফিটিংয়ের কাজ নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার সময় পথ থেকে ধরে কাজের পোশাকেই তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
চার মাস আগে সৌদি আরবে যাওয়া কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার হানিফ জানিয়েছেন তার এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। দেশে ফেরা অনেক কর্মীর অভিযোগ, আকামা তৈরির জন্য নিয়োগকর্তাকে টাকা দেওয়া হলেও সে তা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর নিয়োগকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো দায়িত্ব নেয়নি। বরং তারা প্রশাসনকে ভিসা বাতিল করে দেশে পাঠিয়ে দিতে বলেছে।
পুরুষদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকদেরও দেশে পাঠানো হচ্ছে। এবার ফেরত আসাদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেলিনা আক্তার ও শামিমা বেগম জানান, তারা গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। নিয়োগকর্তার নির্যাতনের শিকার হয়ে তারা দেশে ফিরেছেন। তারা নিয়োগকর্তার বাড়ি থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ দুতাবাসের সেইফ হোমে। একইভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া আক্তার ও খাদিজা, সিরাজগঞ্জের রাশেদাও পালিয়ে সেইফ হোমে আশ্রয় নিয়ে সেখান থেকে দেশে ফিরেছেন।
বরাবরের মতো ফিরে আসা শ্রমিকদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, ২০১৯ সালে সৌদি আরব থেকে ২৪ হাজার ২৮১ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর নতুন বছরের শুরুর চার দিনে ফিরলেন ৩১৭ জন। তারা সবাই ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায়। যারা ফিরছেন তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। পাশাপাশি এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তবে আমরা আশা করছি, সরকারের সাম্প্রতিক নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে নারী নির্যাতন অন্তত কমবে।