বিশেষ দিনেও কক্সবাজারবিমুখ পর্যটক
৫ জানুয়ারি ২০২০ ২২:৫৪
কক্সবাজার: ডিসেম্বরের শেষে এবং জানুয়ারির শুরুতে লাখো পর্যটকের সমাগম হতো কক্সবাজারে। গত তিন বছর ধরে সেই চিত্র বদলাতে শুরু করেছে। কমে আসছে পর্যটকের সংখ্যা।
কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পর পর কয়েকবার বর্ষবরণে কোনো ধরনের আয়োজন না থাকা। সেই সঙ্গে ছিল নানা নিষেধাজ্ঞা। তারা আশঙ্কা করছেন, এভাবে চললে কক্সবাজারে পর্যটক উপস্থিতি শূন্যের কোটায় নেমে আসতে বেশি সময় লাগবে না।
থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে কোনো কোনো বছর পর্যটকের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়ে যেত। শহরের প্রায় পাঁচশ‘ হোটেল-মোটেল, কটেজ আর রিসোর্টগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই মিলতো না। ২০১৭ সালে নিরাপত্তার প্রশ্নে ওপেন কনসার্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পরে সৈকতে অবস্থানে দেওয়া হয় নিষেধাজ্ঞা।
ভারতের কলকাতা থেকে বেড়াতে এসেছেন ঐশী রায়। তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি কক্সবাজারে খুবই আনন্দের সাথে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা হয়। তাই খুব আশা নিয়ে এসেছিলাম, থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে মজা করব। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম ভিন্ন চিত্র। ৯টার পরেই বিচ থেকে হোটেলের রুমে চলে যেতে হয়েছে। কিন্তু কলকতায় থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে রাতভর উৎসব চলে।’
ঢাকা থেকে বেড়াতে এসেছেন রাকিবুল হাসান। তিনি বলেন, ‘বিয়ের আগে ২০১৬ সালে কক্সবাজারে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে এসেছিলাম। তখন খুব আনন্দ করেছি। এবার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছি, কিন্তু হতাশ হলাম।‘
সিলেট থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন আরেক পর্যটক মোহাম্মদ ইয়াছিন। তিনি বলেন, সুযোগ পেলেই কক্সবাজারে আসি। আমি মনে করি, নিরাপত্তা জোরদার রেখে প্রোগ্রাম করা যেত।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই প্রশাসনের মূল কাজ। থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটে এই শহরে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাজ করতে বিদেশি নাগরিক এসেছেন, বিদেশি পর্যটকও আসেন— সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার জন। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় রেখে বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়। হোটেলের ভেতরে প্রোগ্রাম করার সুযোগ রয়েছে, তবে সংশ্লিষ্টদের আবেদন পাইনি আমরা।
ট্যুরিজম সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে আয়োজন করার জন্য আমরা অনেকবার প্রশাসনের কাছে গিয়ে ফিরে এসেছি। তারা বারবার নিরাপত্তার কথা বলে আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছে।