Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ


৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৭:৪২

ঢাকা: সারাদেশের হোটেল, মোটেলসহ বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় একবছরের মধ্যে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর একবার ব্যবহারের উপযোগী ‘ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য’ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১১ সংগঠনের দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এ নির্দেশ দেন।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

প্লাস্টিক পণ্য, বিশেষ করে একবার ব্যবহারের উপযোগী বা ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিধায় বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার নিষিদ্ধে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাংলাদেশে এ ধরনের পণ্যের ব্যবহার বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ১১টি সংগঠন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিল।

রিটের শুনানি নিয়ে প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার বন্ধ রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না— তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়াও আগামী একবছরের মধ্যে দেশের সব উপকূলীয় অঞ্চল ও হোটেল-মোটেল-রেস্টুরেন্টে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।

পাশাপাশি প্লাস্টিক বন্ধের ব্যাপারে কী কী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সচিব, বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ প্লাস্টিক প্রোডাক্ট প্রডিউসার অ‌্যান্ড এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানসহ আট বিবাদীকে ওই প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ও সাঈদ আহমেদ কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

পরে আইনজীবী সাঈদ আহমেদ কবির সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পলিথিন নিষিদ্ধ করার বিধান রয়েছে। কিন্তু তারপরও পলিথিন নিষিদ্ধ করা যায়নি। অপচনশীল এসব ওয়ান টাইম প্লাস্টিক ব্যবহারের ফলে পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে। নদী ও উপকূলীয় অঞ্চল থেকে প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো বঙ্গোপসাগরে পড়ছে। এতে পানি, মৎস্য ও সামুদ্রিক প্রাণীর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

এই আইনজীবী বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশবিদ আইনজীবী সমিতিসহ (বেলা) ১১ সংগঠন গত ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট দায়ের করি এবং রিটে বিভিন্ন গবেষণাপত্র ও বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধের গৃহীত কার্যকর ব্যবস্থাগুলো আদালতে তুলে ধরি।

রিটের সঙ্গে যেসব গবেষণা ও প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তার মধ্যে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এর গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, পদ্মা নদীর মাধ্যমে প্রায় ৩০০ ধরনের প্লাস্টিক পণ্য বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পদ্মা-মেঘনা ও যমুনা নদীর মাধ্যমে বছরে প্রায় ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, বঙ্গোপসাগরে মাছের পেটে এবং লবণের মধ্যে ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা প্রাণিকূল ছাড়াও মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

আইনজীবী সাঈদ আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ একবার ব্যবহারের উপযোগী বা ওয়ান টাইম প্লাস্টিক সামগ্রী নিয়ন্ত্রণ ও রোধে বিভিন্ন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশে এ বিষয়ে এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সে পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা রিটটি দায়ের করেছি।

বিজ্ঞাপন

ওয়ান টাইম প্লাস্টিক টপ নিউজ প্লাস্টিক ব্যবহার প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর