ইভিএমে নীরবে কারচুপি হওয়ার সুযোগ নেই: সিইসি
৬ জানুয়ারি ২০২০ ২০:০২
ঢাকা: বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনকে (ইভিএম) ভোটে কারচুপির প্রকল্প বলে আখ্যা দেওয়া হলেও এমন বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। ফলে আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার সুযোগ নেই বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
সিইসি বলেন, আসন্ন দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ইভিএম ব্যবহারে নীরবে কারচুপি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ইভিএমে আগে থেকে প্রোগ্রামিং করার সুযোগ নেই। ভোটের আগে ভোটের টাইম এই মেশিনে সেট করে দেওয়া হয়। সকাল ৮টার আগে কেউ মেশিন খুলতে পারবে না। আবার ৫টার পরে ভোট দেওয়া যাবে না। ইভিএম অনলাইন সিস্টেম না, অফলাইন সিস্টেম। ফলে কোনো সমস্যা হবে না।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। বিকেল ৪টায় শুরু হয়ে বৈঠকটি চলে সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত।
ব্রিফিংয়ে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, ইভিএমে ভোটগ্রহণের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সুতরাং ইভিএম থেকে সরে আসার সুযোগ নেই। বিষয়টি বিএনপিকে বুঝিয়ৈ বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন- সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের তীব্র বিরোধিতা বিএনপির
সিইসি বলেন, আমরা তাদের (বিএনপি) বুঝিয়ে বলেছি, যার ভোট সে দিতে পারবে। ভোটে কোনো অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই। ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়া, পুড়িয়ে দেওয়াসহ নানা কারণে নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ছিল, সে কারণেই আমরা ইভিএম ব্যবহার করতে পারি। ইভিএমে ভোটার ডাটাবেজ, বায়োমেট্রিক সম্পন্ন হয়েছে। ফলে আমরা ভোটে অনেক প্রটেকশন নিশ্চিত করতে পারি।
বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে নুরুল হুদা বলেন, ইভিএমে নীরবে কারচুপি হওয়ার সুযোগ নেই। সংসদ নির্বাচন, সিটি নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচন করেছি। সেখানে ভোটারদের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল না, প্রার্থীদেরও তেমন অভিযোগ ছিল না।
প্রার্থীদের হয়রানি করা যাবে না, আশ্বাস সিইসি’র
সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের গ্রেফতার-হয়রানি বিষয়ে বিএনপি’র অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত প্রার্থীদের যেন হয়রানি না করা হয়, সে বিষয়ে তিনি পুলিশকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়ে দেবেন।
আরও পড়ুন- ইসির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, উপস্থিত তাবিথ-ইশরাকও
ব্রিফিংয়ে সিইসি বলেন, বৈঠক করে পুলিশকে কঠোরভাবে বলে দেবো, যেন প্রার্থীদের হয়রানি না করা হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানা বিষয়ে বলেছি, নিষ্প্রয়োজনীয় কোনো গ্রেফতার করা যাবে না। কিন্তু ক্রিমিনাল অফেন্স করলে গ্রেফতরা করা যাবে না, তা হবে না। কোর্ট থেকে অর্ডার আসলে সেটি করতে হবে। প্রয়োজনীয় ও নিষ্প্রয়োজনীয় বিষয় কোনগুলো হবে, তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করব। পুলিশের সঙ্গে আনঅফিসিয়ালি কথা বলেছি, তারা অপ্রয়োজনীয় গ্রেফতার করবে না। তাদের বলেছি হয়রানিমূলক গ্রেফতার করা যাবে না। নির্বাচনের বিধি মেনেই নির্বাচন পরিচালনা করা হবে। আইন ও বিধি-বিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন করব।
বিভিন্ন স্থানে আচরণবিধি ভঙ্গ করে প্রচারণার অভিযোগ প্রসঙ্গে নুরুল হুদা বলেন, বিভিন্ন প্রচারণার বিষয়ে শুনেছি, তবে কেউ অভিযোগ করেনি। পত্রিকায় যেসব অভিযোগ আসছে, রিটার্নিং কর্মকর্তারা সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ঢাকা উত্তরের বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি’র ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার ও দলের যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে সিইসি’র নেতৃত্বে বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, কবিতা খানম ও রফিকুল ইসলাম ছাড়াও দুই সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন ও আবুল কাসেম উপস্থিত ছিলেন।