Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সোনালি ব্যাগে মুগ্ধ ক্রেতা


৬ জানুয়ারি ২০২০ ২২:১৬

ঢাকা: পাট থেকে পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগ তৈরি হচ্ছে, এই খবর পুরোনো। নতুন খবর হলো এই ব্যাগ কিনতে পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের স্টলে। এতোদিন যারা ভাবতেন কোথায় গেলে পাওয়া যাবে পরিবেশবান্ধব এই ব্যাগ, তারা ঢুঁ মারতে পারেন বাণিজ্যমেলায়।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মাসব্যাপী চলমান বাণিজ্যমেলায় পাটকল করপোরেশনের স্টলে দেখা গেলো ক্রেতাদের ভিড়। কেউ দেখছেন আবার কেউ কিনছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর দারুণ এই আবিষ্কার।

বিজ্ঞাপন

মেলার মূল ফটক দিয়ে ঢুকে হাতের বাম পাশে এগোলে দেখা মিলবে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) স্টল। তার পাশেই রয়েছে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের স্টল। স্টলের পথ চিনতে ডিজিটাল তথ্য কেন্দ্র থেকেও সহায়তা নেওয়া যাবে।

স্টলে ঢুকলেই চোখে পড়বে তিন রঙের সোনালি ব্যাগ। ব্যাগের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও সেখানে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।

সোনালি ব্যাগ পাটের সেলুলোজ থেকে তৈরি করা হয়েছে। মাটিতে পুঁতে রাখলে এটি এক থেকে ছয় মাসের মধ্যে পঁচে যায়। পরে তা পরিণত হয় জৈব সারে। পানিতে ডুবিয়ে রাখলে ১ মিনিট থেকে ৬ মাসের মধ্যে ব্যাগটি দ্রবীভূত হয়ে যাবে। ব্যাগটি দ্রবীভূত হওয়ার পর তা মাছের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।

সোনালি ব্যাগের ভার বহন ক্ষমতা সাধারণ পলিথিন ব্যাগের চেয়ে দেড় গুণ বেশি। আর ব্যাগটি আগুনে পুড়লে ছাই হয়ে যায়। দেশে উদ্ভাবিত এই ব্যাগটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। কয়েক বছর ধরেই তা বিভিন্ন মেলায় প্রদর্শন করা হচ্ছে। স্বল্প পরিসরে বিক্রিও হয়ে আসছে।

মেলায় স্টলের দায়িত্বে থাকা সোনালি ব্যাগ প্রকল্পের গবেষণা সহকারী সুমন হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, সোনালি ব্যাগ বেশ কয়েকটি রঙের হয়ে থাকে। এখানে তিনটি রঙের ব্যাগ বিক্রি ও প্রদর্শন করা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে এর দাম ধরা হয়েছে ১০ টাকা। ভবিষ্যতে উৎপাদন বাড়লে ধীরে ধীরে দাম আরও কমে আসবে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৫০০ থেকে ৬০০ পিস সোনালি ব্যাগ বিক্রি করেছেন। এবারের মেলায় সোনালি ব্যাগ বিক্রিতে বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আর এখানে যারা আসছেন তারা ব্যাগটি সম্পর্কে জেনেই আসছেন।

বিজ্ঞাপন

স্টল থেকে ১৫ পিস সোনালি ব্যাগ কিনেছেন ব্যবসায়ী দিদারুল ইসলাম। মগবাজারের এই ব্যবসায়ী সারাবাংলাকে বলেন, ‘সোনালী ব্যাগ সম্পর্কে অনেক আগে থেকে জানি। ফেসবুকে একটি পোস্ট দেখে মেলায় তা বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানতে পারি। মেলায় আসার পর তাই এই স্টলে আসা। পাশে থাকার প্রত্যয় থেকেই ১৫ পিস ব্যাগ কিনেছি। পলিথিন তো লাগেই। অনেক কাজেই এর ব্যবহার। মূলত ব্যবহার করার জন্যই ১৫ পিস কিনেছি। দাম কম থাকলে আরও বেশি কেনা হতো।’

মেলায় এসে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলিজির শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তও সোনালি ব্যাগ কিনেছেন। কারণ জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থী বলেন, সোনালী ব্যাগ সম্পর্কে আগে থেকে জানা আছে। মেলায় ব্যাগ পেয়ে আর দেরি করেন নি। কিনে নিয়েছেন। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বন্ধুদের দেখাবেন। এই ব্যাগ বাজারজাতকরণের বিষয়টিকে তিনি খুব ইতিবাচকভাবে দেখছেন বলে জানান।

আবার কেউ কেউ সংগ্রহে রাখার জন্যও কিনছেন সোনালি ব্যাগ। এদেরই একজন টুরিজ্যম সেক্টরে কর্মরত ফাহিম। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সামনাসামনি সোনালী ব্যাগ দিখেছি। নিজের সংগ্রহে রাখার জন্যই নেওয়া হয়েছে। তবে দাম এখনও বেশি। আমরা চাই দ্রুত ব্যাগটির আরও বেশি উৎপাদন হোক। দামও মানুষের হাতের নাগালে আসুক।’

কয়েকজন ক্রেতা সারাবাংলাকে বলেন, ব্যাগটির দাম ২ থেকে ৫ টাকার মধ্যে আসলে তা ক্রেতাদের হাতের নাগালে আসবে। পাটকল করপোরেশন সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, প্রতিদিন ১ লাখ পিস সোনালি ব্যাগ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে তাদের। উৎপাদন বাড়লে খরচও কমে আসবে। তখন এর দামও পলিথিনের কাছাকাছি চলে আসবে।

পাটকল করপোরেশনের ডিজিএম (মার্কেটিং) মো. ফারুক মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই সোনালি ব্যাগ নিয়ে আমরা ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। স্টলে বেশিরভাগ সময় ক্রেতাদের ভিড় থাকছে। ব্যাগটি সম্পর্কে মেলায় সামনের দিনগুলোতে ক্রেতাদের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’

পাটকল করপোরেশন বাণিজ্যমেলা সোনালি ব্যাগ

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে আগুনে পুড়ল ৫ দোকান
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৩৪

আরো

সম্পর্কিত খবর