‘সুপারিশ এলেও বাতিল হবে না এসএসসি পরীক্ষা’
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২০:০৯ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৪৫
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকাঃ প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি সুপারিশ করলেও ঝামেলা এড়াতে এসএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। প্রশ্নফাঁস নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে তিনমন্ত্রীর জরুরি বৈঠক শেষে একথা জানান তিনি।
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এসময় ছয়জন সচিবও অংশ নেন ওই বৈঠকে।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসেন বলেন, প্রশ্নফাঁস হওয়া ও করণীয় বিষয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। তারা নিশ্চয় আমাদের কাছে সুপারিশ করবে। সুপারিশ করার পরেও আমি বলবো, প্রশাসনিকভাবে সে সিদ্ধান্তটি নিতে চাই না। কারণ এর সাথে অনেক কিছু জড়িত রয়েছে। ২০ লাখ ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকের ব্যাপার আছে। সেটি আপনারাও চিন্তা করবেন। অত্যন্ত সুচিন্তিত ও বেশি গ্রহণযোগ্য কোন পথ আমাদের বের করতে হবে। তবে সেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিবেন, সুপারিশ করবেন। সেই সুপারিশের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশ্নফাঁস হওয়ার পরও পরীক্ষা বাতিল না করে আগামীতে পরীক্ষা গ্রহণে বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে জানিয়ে শিক্ষা সচিব বলেন, আমরা আগামীতে অবশ্যই পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন আনবো। আমরা ডিজিটাল যে কোন পদ্ধতিতে যাই না কেন, নতুন একটা প্রশ্নব্যাংক আমাদের বানাতে হবে। আর একটা প্রশ্নব্যাংক বানাতে তিন চার মাস সময় লাগবে। সুতরাং চলতি এসএসসি পরীক্ষাটা আমরা ধরতে পারছি না। তবে আশা করছি আগামী এসএসসি পরীক্ষা থেকে নতুন কোন ব্যবস্থা করা হবে।
শিক্ষা সচিব বলেন, এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা বাতিল করার বিষয়টি আমরা আগেও বলেছি। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বলেছেন। ফলে আমাদের সেই প্রক্রিয়ায় আসতে হবে।
পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপানো প্রসঙ্গে সচিব সোহরাব হোসেন বলেন, প্রশ্নপত্র সরাসরি পরীক্ষার রুমে কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে দিতে পারি কিনা, এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হল কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে, বর্তমান যে অভিজ্ঞতা সেটি বাস্তবায়ন করা কঠিন। কারণ এতে করে ঝুকি রয়ে যাবে। আমাদের এমন কোন পথ আবিষ্কার করা প্রয়োজন যেখানে প্রশ্নফাসঁ হবে না।
প্রশ্নফাসের বিষয়ে এ পর্যন্ত ৫২টি মামলায় ১৫২ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে সচিব জানান, অপরাধীর ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।
সোহরাব হোসেন বলেন, আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য পরীক্ষা শেষ করা। আপনারা দেখছেন গত পরশু থেকে পরিস্থিতি মোটামুটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং আমরা আশা করছি বাকি পরীক্ষাগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এভাবে নতুন কোন পদ্ধতি এইচএসসি পরীক্ষার আগে নেয়ার সুযোগ নেই। সে কারণে আমরা আজকের বৈঠকে আগামী এইচএসসি পরীক্ষা (আগামী ২ এপ্রিল) কিভাবে সুষ্ঠুভাবে নেওয়া যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। এখনো এক দেড় মাস বাকি আছে এই সময়ের মধ্যে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নেয়ার জন্য আমাদের আর কি করনীয় রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পৃন্ন করতে ইতিপূর্বে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল সেগুলো অব্যাহত থাকবে। পরীক্ষার ত্রিসীমানার মধ্যে শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্রছাত্রী যে কারো কাছে মোবাইল ফোন থাকবে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এছাড়া পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যে কোনো স্থানে, যে কারো কাছে পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন।
সারাবাংলা/জিএস/এমএস