প্রচারণায় আ. লীগের চেয়ে বিএনপি মহাসুবিধায়: এইচ টি ইমাম
৮ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:০১
ঢাকা: ঢাকা দুই সিটি নির্বাচনের প্রচারণায় আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপি মহাসুবিধায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুই সিটির নির্বাচন নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের অনেক এমপি নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে পারছে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, লেভেল প্লেইং ফিল্ডে বিএনপি আমাদের চাইতে অনেক উপরে। ঢাকায় আত্মীয়-স্বজন থাকায় আমাদের অধিকাংশ এমপিরা এখানেই থাকেন। নির্বাচন ছাড়াও অন্য বিষয়ে আলাপ-আলোচনায় অসুবিধা আমাদেরই। তাই বিএনপি’র জন্য এটি মহা সুবিধার। যা বলার তাই বলছেন। অথচ আমরা প্রচারণায করতে পারছিনা। তবে আমাদের সুযোগ সুবিধার জন্য এই আইন পরিবর্তন করা হোক এটা কখনো বলবো না। ভবিষ্যত পরিস্থিতি দেখে পরিবর্তনের চিন্তা করা হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ করে চলেছে। এর থেকে তারা একটি অবস্থান সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে একটি ছায়া যুদ্ধ করছেন তারা। এখন পর্যন্ত এমন কোনো ঘটনা দেখিনি যে তাদের কাউকে অ্যারেস্ট করা হয়েছে কিংবা এলাকা শূন্য করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে ইভিএমের ট্রেনিং সরঞ্জাম ও প্রচার সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। প্রতিটি কেন্দ্রে কতজন পোলিং এজেন্ট থাকবেন, কতজন নারী থাকবেন, তাদের ট্রেনিংয়ের কি ব্যবস্থা করা হয়েছে – এসব বিষয়ে জানতে চেয়েছি। ইসি জানিয়েছে তারা ইভিএম নিয়ে ব্যাপক প্রচারে নেমেছে। তারা জানিয়েছেন – ইভিএম ব্যবহারের সময় যাতে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি না হয় এজন্য সেনাবাহিনী থেকে টেকনিশিয়ান নিয়েছেন।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ইভিএমের মাধ্যমে ভোট কারচুপির কথা বিএনপি অনেক আগে থেকেই বলে আসছে। মেশিন তো কাউকে চেনে না। এত ভাবে পরীক্ষা করার পরও কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। আমরা দেখব নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের এমপি তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমুকে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে নির্বাচনি বিধি লঙ্ঘন হয়েছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা কিন্তু প্রচারের দায়িত্বে না। বলা হয়েছে মনিটরিং ও খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। তারা তো বাইরে গিয়ে প্রচার করছেন না।
সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ডিএনসিসি নির্বাচনের আ’লীগ প্রার্থীর নির্বাচন ক্যাম্প উদ্বোধন করেছেন, এই ধরণের কর্মকাণ্ড সরকার দলীয় এমপিরা কিভাবে করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তো বলতে পারবো না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়নি। নিয়োগ দেওয়া হলে তখন দেখবো, দলীয় কেউ নিয়োগ পেয়েছে কিনা। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচন। এজন্য সরকার কী সহায়তা করতে পারে, সেটা নিয়ে আলোচনা করতে এসেছিলাম।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের নেতৃত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, রফিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং দুই সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন ও আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, নির্বাচনি কাজে চট্টগ্রাম থাকায় এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের নির্বাচনি পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমামের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট দেবুল কুমারসহ অনেকেই।