ধর্ষণের পর ঢাবি শিক্ষার্থীকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল মজনুর: র্যাব
৮ জানুয়ারি ২০২০ ২০:২২
ঢাকা: ধর্ষণের পর ঢাবি শিক্ষার্থীকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল মজনুর। শ্বাসরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে তিনি বারবার গলা টিপে ধরেছেন। মেয়েটি ধস্তাধস্তি করে পালিয়ে আসতে না পারলে ভিন্ন কিছু ঘটতে পারতো— বলছে র্যাব।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মজনুর বরাত দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় চিকিৎসা নিতে মজনু কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বের হয়ে হাসপাতালের গেটের পাশে তিনি ঢাবি শিক্ষার্থীকে দেখতে পান। এরপর একটু সামনে এগিয়ে ঝোঁপের পাশে ওৎ পাতেন মজনু এবং চারদিকে নজর রাখেন কেউ আসছে কি না। পথে মেয়েটি একাই ছিলেন। তিনি ফুটপাত ধরে হেঁটে শেওড়া এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, নির্যাতনের শিকার মেয়েটির শ্বাসজনিত সমস্যা রয়েছে। যে কারণে মজনু যখন মেয়েটির মুখ এবং গলা চেপে ধরে, তখন সে নিস্তেজ হয়ে যায়। অচেতন হয়ে পড়ে। তার শরীরে কোনো ধরনের চেতনানাশক ওষুধ বা মাদক প্রয়োগ করা হয়নি।
আমরা জানতে পেরেছি, রাত ১০টার দিকে মেয়েটি সম্বিত ফিরে পান। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি মজনুকে ফেলে দৌড়ে পালান। রাস্তা পার হয়ে শেওড়া রেলক্রসিং থেকে রিকশা নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যান। বান্ধবীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান।
মেয়েটি পালিয়ে যাওয়ার পরে মজনুও খালি হাতে চলে যান। পরে ঘটনাস্থলে ফিরে এসে মোবাইল ফোন, পাওয়ার ব্যাংক ও ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে যান বলে জানিয়েছেন মজনু। যে কারণে আলামতগুলো এলোমেলো হয়ে গেছে— বলেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, ধর্ষক একজনই ছিল। মজনু এবং ঢাবি শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। মজনুকে আটক করার পরে তার ছবি মেয়েটিকে দেখানো হয়েছিল। তিনি শনাক্ত করার পরেই আসামিকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, মজনুর বাড়ি নোয়াখালী জেলার হাতিয়ায়। ১০ বছর আগে তিনি ঢাকায় আসেন। কয়েক বছর আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন, স্ত্রী মারা গেছেন। ঢাকার কমলাপুর, তেজগাঁও, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় থাকতেন তিনি। মজনু মাদকাসক্ত। ছিনতাই তার মূল পেশা। এর আগেও তিনি ভাসমান নারী ভিখারীকে একই জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছেন।