২০২১ সালের ২-৮ জানুয়ারি ৬ষ্ঠ জনশুমারি
৯ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:৪৫
ঢাকা: ২০২১ সালের ২ থেকে ৮ জানুয়ারি সারাদেশে ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম হিসেবে ফেব্রুয়ারি মাসে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে দেশব্যাপী খানা তালিকা প্রণয়ণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে পরবর্তী জনশুমারি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় জনশুমারি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্সবর্তীর সভাপতিত্বে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবন সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ ক্য়াকাউস, ইউএনএফপিএর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. আশা টরকেলশন। এর বাইরে স্বাগত বক্তব্য দেন বিবিএস এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. জাহিদুল হক সরদার।
কর্মশালয় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘কোনো জায়গায় যেন বাড়তি কোনো খরচ না হয়। এক টাকা দিয়ে পারলে দুই টাকা খরচ করবেন না। পাশাপাশি সময়মত যেন নির্ভুল কাজ করা যায় সেদিকে নজর রাখবেন। মনে রাখবেন এর সঙ্গে সরকারের সুনাম জড়িত। আমরা চাই কতজন মানুষ দেশে আছে তার সঠিক তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরতে। কম হউক বা বেশি হউক সেটা বড় কথা নয়। আগের চেয়ে আরও নিখুঁত তথ্য তুলে ধরতে হবে।’
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘যদি আপডেট তথ্য দেওয়া যেত ডুয়িং বিজনেস প্রতিবেদনে আমরা আরও অনেক এগিয়ে যেতে পরতাম। জনশুমারির মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করবেন তাদেরও সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে; যাতে তারা সঠিক তথ্য তুলে আনতে পারেন।’
ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, ‘দেশের টেকনিক্যাল ও পেশাদারী প্রতিষ্ঠান বিবিএস। যখন বিশ্বব্যাংক তথ্য দেয় তখন আমরা খুশি হই, বিশ্বাস করি। কিন্তু এটা অনেকেই জানেন না যে, এসব তথ্য বিবিএস থেকেই নেওয়া হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত জনশুমারি প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। আমার বাসায়ই কেউ যায়নি। এবার যেন এ রকম প্রশ্নের সৃষ্টি না হয়।’
কর্মশালায় জানানো হয়, ২০১৯ সালের অক্টোবরে একনেক সভায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদিত। সংশ্লিষ্ট সকলকে শুমারি বাস্তবায়ন পদ্ধতি অবহিতকরণ এবং খানা তালিকা প্রণয়ন কার্যক্রমে ব্যবহৃত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ এবং অংশীজনদের মতামত নেওয়ার জন্য দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।’
কর্মশালায় আরও জানানো হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন ও স্বরণীয় করে রাখার জন্য বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ২০২০ সালের ১৭ মার্চ হতে শুমারির ক্ষণগণনা (কাউন্টডাউন) শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ক একটি সার-সংক্ষেপ অনুমোদন করেছেন। এর আগে ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি আওয়ারকে শুমারির রেফারেন্স পয়েন্ট হিসাবে ধার্য করেছেন। সে হিসেবে দেশব্যাপী শুমারির মূল গণনা কার্যক্রম ২০২১ সালের ২ থেকে ৮ জানুয়ারি সাত দিনব্যাপী পরিচালিত হবে।
এছাড়া খানা তালিকা প্রণয়ণের জন্য প্রথমবারের মতো এ শুমারিতে মূল শুমারির আগে লিস্টিং অপারেশন পরিচালনা করা হবে। এবং প্রতিটি খানার জন্য একটি ইউনিক হাউজহোল্ড আইডি দেওয়া হবে। শুমারিতে প্রথমবারের মত মাল্টিমোড (মোবাইল অ্যাপ, ওয়েব অ্যাপ, পিক অ্যান্ড ড্রপ, পেপার বেইজড, কল সেন্টার ইত্যাদি) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মত সীমিত আকারে ই-সেন্সাস পরিচালনা করা হবে। শুমারিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক ও বিদেশে অবস্থান ও ভ্রমণরত বাংলাদেশী নাগরিকদেরও গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে কর্মশালায় জানানো হয়। এবারের গণশুমারির জন্য প্রতিযোগীতামূলক নিয়োগ পদ্ধতিতে নূন্যতম উচ্চমাধ্যমিক এইচএসসি পাস স্থানীয় যুবক ও যুব মহিলাদেরকে গণনাকারী ও সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।
পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী আদমশুমারিকে জনশুমারি হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দেশে সর্বশেষ ২০১১ সালে আদমশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল। সে সময়ের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশে মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৪ কোটি ৪০ লাখ।