মানসিক স্বাস্থ্য সেবার প্রসারে পরিকল্পনা প্রয়োজন: সায়মা ওয়াজেদ
৯ জানুয়ারি ২০২০ ২২:৩৪
ঢাকা: বাংলাদেশ অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ বলেছেন, দেশের সর্বস্তরে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার প্রসারে টেকসই পরিকল্পনা প্রয়োজন। এছাড়াও বিভিন্ন পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে না পারা শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কৌশলগত পরিকল্পনা ২০২০-২০৩০’ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
এ সময় প্রজেক্টরের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে দেশ ও বিদেশের নানা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়। এতে অটিজম আক্রান্ত ও মানসিক স্বাস্থ্য হ্রাস পাওয়া শিশুদের সামাজিকভাবে মূল্যায়ন করার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন সায়মা ওয়াজেদ।
সায়মা ওয়াজেদ বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও মানসিক রোগের ঝুঁকি নিরসনে তথ্য ব্যবস্থাপনা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গবেষণার কোন বিকল্প নেই। মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সুরক্ষায় আমাদের এখন থেকেই কাজ করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে এ সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে না পারা শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। এডুকেশন সিস্টেমে যারা কাজ করে, তাদেরকেও যেন এমনভাবে কিছু জিনিস শেখানো হয়, বাচ্চাদের স্ট্রেস যাতে না বাড়ে।
সায়মা ওয়াজেদ আরও বলেন, মানসিক শিক্ষাকে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দেশের সকল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোতে ক্লিনিক্যাল মনোবিদ নিয়োগ দিতে হবে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, শারীরিক স্বাস্থ্যের মত মানসিক স্বাস্থ্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তবে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে দেশের সাধারণ জনগণ এখনও কুসংস্কারমুক্ত নয়। তাদের ধারণা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করলে মানুষজন তাদের পাগল বলতে পারে। এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
তিনি মানসিক স্বাস্থ্যের কর্মকৌশল তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য প্রধান উপদেষ্টা সায়মা ওয়াজেদসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি মানসিক স্বাস্থ্যের কর্মকৌশল বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় তৃণমূলে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে করণীয় বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্যনীতির চূড়ান্ত খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানানো হয় এ সভায়।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কান্ট্রি প্রতিনিধি ড. বর্ধন জং রানা, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপদেষ্টা নাজনীন আনোয়ার সহ অন্যান্যরা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞরাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা।