Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের ক্ষণগণনায় উৎসবমুখর বন্দরনগরী


১০ জানুয়ারি ২০২০ ২০:১৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বর্ষের ক্ষণগণনা শুরুর দিন থেকে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কার্যালয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ‍চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে ক্ষণগণনার নানা আয়োজন। এসব আয়োজনে সৃষ্টি হয়েছে বিপুল উদ্দীপনা। বিভিন্নস্থানে ক্ষণগণনার জন্য স্থাপন করা হয়েছে কাউন্টডাউন ক্লক।

বিজ্ঞাপন

সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম সেনানিবাসেও শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেল তিনটায় শুরু হয় ক্ষণগণনা অনুষ্ঠান। এতে ঊর্দ্ধতন সেনা কর্মকর্তারা ছাড়াও দর্শকসারিতে ছিলেন সেনাবাহিনী পরিচালিত বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। শুরুতে ঢাকায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ার থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বর্ষের ক্ষণগণনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি বড় পর্দায় সম্প্রচার করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ক্ষণগননার উদ্বোধন করেন সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান। এসময় পায়রা উড়ানো হয়। ব্যান্ডের তালে বাজছিল মুক্তিযুদ্ধের কালজয়ী ‘জয় বাংলা-বাংলার জয়’ গানটিও। এসময় সেনা কর্মকর্তারা দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে স্যালুট জানান।

একই সময়ে পার্বত্য জেলার গুইমারা, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি অভিযান অঞ্চলে এবং বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ), আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুল ও ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডেও একই কর্মসূচির সূচনা হয়েছে।

কথা হয় অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও। সামিয়া নামে এক স্কুলছাত্রী সারাবাংলাকে বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জাতির পিতা। তিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। এই অনুষ্ঠানে এসে আমি জাতির পিতা সম্পর্কে অনেককিছু জানতে পারলাম।’

জেরিন নামে আরেক শিক্ষার্থী সারাবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মের ১০০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এটা অনেক আনন্দের। আমরা বঙ্গবন্ধুকে অনেক ভালোবাসি। দেশের মানুষ অনেক ভালোবাসে। কারণ তিনি দেশের জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বর্ষের ক্ষণগণনার সবচেয়ে বড় আয়োজনটি হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গনে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এই আয়োজন করেছে। শুক্রবার দুপুর থেকে জিমনেশিয়ামসহ আশপাশের এলাকায় মানুষ জড়ো হতে শুরু করেন। হাতে ছিল পতাকা, মুখে ছিল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।

জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গনে এবং আশপাশে বড় পর্দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রচার হয়। হাজার, হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরই চট্টগ্রাম নগরীতে সিটি করপোরেশনের স্থাপিত কাউন্টডাউন ক্লক চালু হয়। রাতে সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গনে ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমিন, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনসহ ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ছিলেন।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু আমাদের এই মুক্ত, স্বাধীন স্বদেশ দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় যাকে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। দেশ স্বাধীনের পর আজকের এইদিনে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধু যখন দেশ গড়ার কাজে হাত দিলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালোরাতে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয়, তার পরিবারের সদস্যদেরকেও হত্যা করা হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জীবিত ছিলেন। তিনি দেশে ফিরে দলের ভার হাতে নেন। এখন তিনি দেশ পরিচালনা করছেন। সারাবিশ্বে সম্মানের সাথে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তিনি। উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এটাই হচ্ছে স্বাধীনতার সুফল। বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় জাতির জনকের জন্মশত বর্ষের আয়োজন হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।’

এদিকে নৌবাহিনীর চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ ঘাঁটিতেও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বর্ষ উপলক্ষে চালু হয়েছে কাউন্ট ডাউন ক্লক। নৌবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল আবু আশরাফ এর উদ্বোধন করেন। এই নৌ ঘাঁটিতেও শুক্রবার বিকেলে সরাসরি পর্দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষণগণনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্প্রচার হয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মুজিববর্ষ মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর