বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানাতে হলে বৈষম্য কমান: মেনন
১১ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:৪৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মানুষে-মানুষে বৈষম্য কমানোর রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে জন্মশতবর্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেনন এ আহ্বান জানিয়েছেন। নগরীর দোস্ত বিল্ডিংয়ে দলীয় কার্যালয়ে দলের পলিটব্যুরোর সদস্য হাজি বশিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, লহ্মীপুর ও ফেনী জেলার পার্টি প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘পাকিস্তান আমলের আন্দোলন এবং আমাদের স্বাধীনতার অন্যতম লক্ষ্য ছিল আঞ্চলিক বৈষম্য এবং ধনবৈষম্য কমানো। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি, উন্নয়নের সঙ্গে সমান্তরালে বাড়ছে বৈষম্য। ধনী-গরীবের মধ্যে বৈষম্য বাড়ছে। অঞ্চলভেদেও বৈষম্য প্রকট হচ্ছে। বলা হচ্ছে, দারিদ্র্যের হার গড় ২১ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। অথচ কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় এই হার ৭০ শতাংশ।’
‘বঙ্গবন্ধু তাঁর সারাজীবন এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই লড়েছেন। স্বাধীন দেশে কলঙ্কজনক হত্যাকাণ্ডের আগপর্যন্ত তিনি সাধারণ মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন । জন্মশত বর্ষের প্রাক্কালে এই মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, যদি মুজিববর্ষে সত্যিকারভাবে বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানাতে হয়, তাহলে বৈষম্য অবসানের রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে। সেটাই হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধার্ঘ। আমি বলব, বঙ্গবন্ধুকে প্রকৃত সম্মান জানাতে হলে ধনী-গরীবের বৈষম্য কমান, মানুষে-মানুষে বৈষম্য কমান।’
মেনন বলেন, ‘পাটকল শ্রমিকরা অনশনে জীবন দিয়ে মজুরি কমিশনের রোয়েদাদ বাস্তবায়নের দাবি আদায়ে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু পাটকলগুলি ব্যক্তি মালিকানায় তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র এখনও বন্ধ হয়নি। অন্যদিকে কেবল পেঁয়াজ নয়, দ্রব্যমূল্যের ক্রম ঊর্ধ্বগতি জনজীবনকে ভারাক্রান্ত করে তুলেছে। এটা চলতে থাকলে উন্নয়নের সকল স্লোগানই ফিকে হয়ে যাবে।’
বর্ষীয়ান এই বাম নেতা বলেন, ‘সব ধরনের বৈষম্য, অনাচার, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এবং সমতাভিত্তিক সমাজ নির্মাণের জন্য ওয়ার্কার্স পার্টি তার ২১ দফা নিয়ে লড়াই এগিয়ে নেবে।’
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহানের সঞ্চালনায় বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- দলের পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবু হানিফ, মাসুদুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সদস্য দিদারুল আলম চৌধুরী, কক্সবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক মাঈনুদ্দিন শাহেদ, বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক ইতেন ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি সুমতি রঞ্জন চাকমা এবং যুব মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কায়সার আলম।
৩১ জানুয়ারি নগরীর লালদীঘি ময়দানে কেন্দ্রঘোষিত চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন নিয়ে এই প্রতিনিধি সভা হয়েছে।