পদ্মাসেতুর ২১তম স্প্যান বসছে ১৫ জানুয়ারি
১২ জানুয়ারি ২০২০ ০৯:৪৫
ঢাকা: এই প্রথমবারের মতো পদ্মাসেতুর তলদেশে কৃত্রিমভাবে মাটি প্রক্রিয়াজাত করে গড়ে তোলা পিলারের উপর স্প্যান বসাতে যাচ্ছেন প্রকৌশলীরা। নদীর তলদেশের মাটিতে রাখার উপযোগী না হওয়ায় বিরল একটি পদ্ধতিতে যে ১১টি পিলার গড়ে তোলা হয় তার মধ্যে একটি ৩২ নাম্বার পিলার। আর সেই পিলারে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পদ্মাসেতুর ২১ তম স্প্যান বসানো হবে।
পদ্মাসেতুর আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান জামিলুর রেজা চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, বিশেষ পদ্ধতিতে নদীর তলদেশে মাটির গুণগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে এখানে পিলার গেঁথে রাখা হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, এমন পদ্ধতি বাংলাদেশে প্রথমবারের মত এবং বিশ্বে খুব একটা নজির নেই।
পদ্ধতিটির ব্যাখ্যা দিয়ে জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, পাইলের সঙ্গে স্টিলের ছোট ছোট পাইপ ওয়েল্ডিং করে দেওয়া হয়েছে। আর পাইপের ভেতর দিয়ে এক ধরনের কেমিক্যাল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে নদীর তলদেশের মাটিতে। ফলে তলদেশের মাটি শক্ত রূপ ধারণ করে। এরপর এসব পাইল ভার বহনের সক্ষমতা অর্জন করে। এ পদ্ধতিটির নাম স্কিন গ্রাউটিং ।
পদ্মাসেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে ১১টি খুঁটি গড়ে তোলা হচ্ছে তারমধ্যে আগামী ১৫ জানুয়ারি ৩২ ও ৩৩ নাম্বার খুঁটিতে স্প্যান বসানো হবে। ৩২ নাম্বার খুঁটিটি স্কিন গ্রাউটিং পদ্ধতিতে গড়ে তোলা। এরকম পিলারের উপর প্রথমবারের মতো স্প্যান স্থাপন করা হবে।
সেতু নির্মাণকারী চীনের প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানায়, ১৪ জানুয়ারি মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ২১তম স্প্যানটি জাজিরার দিকে নেওয়া শুরু হবে। তারপরের দিন ১৫ জানুয়ারি দুপুরের মধ্যে এটি বসিয়ে দেওয়া হবে।
জানা যায়, সেতুর ৪২টি খুঁটির মধ্যে ৩৬টি খুঁটির কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। ৬টি খুঁটি (৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭, এবং ২৯) বাকি রয়েছে। বাকি খুঁটির মধ্যে ৮, ১০ , ১১, ২৯ এই চারটির কাজ আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে শেষ হবে। এছাড়া ২৬ এবং ২৭ নম্বর খুঁটির কাজ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে বলে জানা যায়।
সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ২০টি স্প্যান স্থায়ীভাবে স্থাপন শেষে এখন দৃশ্যমান তিন কিলোমিটার পদ্মাসেতু। চলতি জানুয়ারি মাস থেকে প্রতিমাসে ৩টি করে স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।