জনসেবার জন্য মোজাম্মেল হোসেন অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন
১৩ জানুয়ারি ২০২০ ২২:৪৫
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রয়াত সংসদ সদস্য মো. মোজাম্মেল হোসেন দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্যরা। অসহায় মানুষকে তিনি যেভাবে সেবা করেছেন, তা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে চলতি সংসদের সদ্যপ্রয়াত সদস্য মো. মোজাম্মেল হোসেনের শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এসব মন্তব্য করেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. মোজাম্মেল হক গত ৯ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাতে মারা যান। অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। পরে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়নে মোজাম্মেল হক দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি চলে গেলেও যে অবদান রেখে গেছেন, ভবিষ্যতে পথ চলতে তা আমাদের অনুপ্রেরণা দেবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বলেন, তিনি একজন ভালো বক্তা ছিলেন। রাজনীতি ও চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি তিনি সামাজিক উন্নয়নে দুঃখী মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন।
আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা, সাবেক তথ্য ও সংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ বলেন, তিনি একজন চিকিৎসক হিসেবে মানুষকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিতেন। একজন অনুকরণীয় সমাজসেবক ছিলেন। এসময় তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আমাদের যাদের বয়স ৮০ বছরের বেশি, তারা যেকোনো সময় চলে যেতে পারি। যদি কোনো ভুল-ত্রুটি করে থাকি, আপনারা ক্ষমা করে দেবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, তিনি একজন গ্রামের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করতেন, একজন উচ্চবিত্তের সঙ্গেও সেভাবে আচরণ করতেন, কথা বলতেন। তার বাড়ি ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য অবারিত দ্বার, সাধারণ মানুষের জন্যও ছিল অবারিত। কোনো রোগীর টাকা না থকলে তার চিকিৎসার পাশাপাশি ওষুধ কেনার ব্যবস্থা করে দিতেন। তার জনসেবা, মানবসেবার দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তিনি একজন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি রাজনীতিবিদ হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি জনপ্রিয় চিকিৎসকও ছিলেন। বিশেষ করে মা-বোনদের কাছে চিকিৎসক হিসেবে তার জনপ্রিয়তা ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি প্রসূতিদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিতেন।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, মানুষের সঙ্গে তার ব্যবহার ছিল অমায়িক। তিনি মানুষের সেবা করে গেছেন। তিনি সমাজের জন্য কাজ করেছেন। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, কিন্তু তার কর্ম আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে।
নৌপরিবহন প্রতিন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তার দ্বারা আমরা উৎসাহিত হতাম। আসি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে মোংলা বন্দরে গেলে তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, উৎসাহিত করেছিলেন। তিনি আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেও তার কাছ থেকে আমরা উৎসাহ পাব।
অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগ নেতা আ ফ ম রুহুল হক, মৃণাল কান্তি দাস, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহিদ, আ স ম ফিরোজ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান। পরে সংসদে শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়।
এমপি মোজাম্মেল হোসেন মো. মোজাম্মেল হোসেন শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা সংসদে শোক প্রস্তাব