ঢাবির ৬৭ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশ
১৪ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:৪৬
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগে ৬৩ জন ও মুহসীন হলে অস্ত্রসহ গ্রেফতার চারজনসহ মোট ৬৭ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদ। এছাড়া বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে ছিনতাই ও মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩ জন এবং সাংবাদিক নিপীড়নের ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে শৃঙ্খলা-কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। আগামী সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাবি প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ভর্তিতে প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগে ৬৩ জন ও মুহসিন হলে অবৈধ অস্ত্র রাখার অপরাধে চারজনকে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। আগামী সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর মধ্যে ভর্তি জালিয়াতদের বিরুদ্ধে পাবলিক আইন লঙ্ঘন ও মানি লন্ডারিংয়ের তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মুহসিন হলের চারজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও দেশবিরোধী অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময় ছিনতায় ও মাদকের সংশ্লিষ্টতায় ১৩ জনকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসে পেশাগত দ্বায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দুজনকে ছয় মাস করে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।’
২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে শহীদুল্লাহ হল থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক মহিউদ্দিন রানা ও আবদুল্লাহ আল মামুন নামে দুই ছাত্রকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাদের কাছ থেকে এটিএম কার্ডের মতো দেখতে ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়, যা দিয়ে পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হতো। পরদিন তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারা এবং ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা আইনের ৯(খ) ধারায় মামলা করে সিআইডি। এ মামলায় ১২৫ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ, সিআইডি। পরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং পাবলিক পরীক্ষা আইনে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
আসামিদের মধ্যে ৮৭ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় জড়িত ১৫ জনকে তখন আজীবন বহিষ্কার করেছেন কর্তৃপক্ষ। বাকিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় শৃঙ্খলা পরিষদের বৈঠকে ৬৩ জনকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।