বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ
১৫ জানুয়ারি ২০২০ ১৫:০৭
ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির ঘটনায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্যসহ দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলে সাইফুল ইসলাম।
পরে আইনজীবী এম কে রহমান সাংবাদিকদের বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃতির যে ঘটনাটি ঘটেছে এটিকে আদালত বেআইনি ঘোষণা করেছেন। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী এ ঘটনায় যারা দোষী প্রমাণিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সংবিধান ও আইন অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণে মন্ত্রী পরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত এ আদেশ দিয়ে রুলটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির অভিযোগে হাইকোর্টে রিট করেন যশোর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বিপুল। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশের পর মন্ত্রীপরিষদ সচিবের পরামর্শে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদারকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
ওই কমিটি তদন্ত করে গত ১৫ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলে জানায় তদন্ত কমিটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতার ছবি এবং ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথ দায়িত্ব পালন করা হয়নি। এছাড়া ২০১৮ সালের ক্যালেন্ডারে জাতির পিতার ছবির ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির নাম লেখাও সমীচীন হয়নি।
এতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডার পুনর্মুদ্রিত। আগের (প্রথম) প্রিন্ট করা কপিতে জাতির পিতার ছবি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিদ্র করে স্পাইরাল বাইন্ডিং করা হয়। এছাড়া জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি (ছবির মাথা কেটে) বিকৃত করা হয়, যা প্রথম মুদ্রিত ডেস্ক ক্যালেন্ডার থেকে স্পষ্টত প্রমাণ পাওয়া যায়। জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা করেননি। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই তারা দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। তাদের ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বর করা উচিত ছিল।
এ ঘটনায় গত ৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা সশরীরে হাইকোর্টে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনাও করেছিলেন।