বদলাচ্ছে সৌদি সমাজ, ক্যাফেতে ভিড় নারীদের
১৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:৫১
প্রচণ্ড রক্ষণশীল সৌদি আরবের সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তন আসছে। রাস্তার পাশে কফি শপের দিকে তাকালেই তা লক্ষ্য করা যায়। নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশীদার করা ও তেল নির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে থেকেই সৌদি আরব তা সম্ভব করছে।
যদিও আচমকা এই পরিবর্তন ভালো চোখে দেখছেন না সমাজের প্রবীণ অংশ। নারী ও পুরুষের একসঙ্গে সিনেমা দেখা, কনসার্টে যাওয়া, দোকানে কফি খাওয়া, নারীদের পশ্চিমা পোশেক অভ্যস্ত হওয়ার মতো বিষয় তারা মেনে নিতে পারছেন না।
নাবত ফেনজান কফি শপের কথাই ভাবা যাক। রিয়াদে অবস্থিত এই কফি শপটি খোলা হয়েছিল শুধু নারীদের জন্য। তবে ২০১৮ এর শেষের দিকে নারী ও পুরুষ ক্রেতাদের একসঙ্গে এখানে বসার সুযোগ দেওয়া হয়।
তারেক আলহামদ নামের এক ক্রেতা এ বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না। তিনি বলেন, আমি সেখানে গিয়েছি এবং মেনে নিতে পারিনি। তারা দেশের নিয়ম মানছে না। এটি একেবারে বন্ধ করা হবে বলে আশা করছি।
যদিও এখনো সৌদি আরবের অধিকাংশ ক্যাফে দুভাগে বিভক্ত। আলাদা বসার জায়গা রয়েছে ‘অবিবাহিত’ পুরুষ ও ‘পরিবার’ এর সদস্যদের জন্য। বিল দেওয়ার ক্ষেত্রেও নারী-পুরুষের পৃথক সুযোগ রাখা হয়েছে। যাতে করে নারীরা তাদের ‘নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা’ রক্ষা করতে পারেন।
তবে নতুন উদ্যোক্তরা সৌদি আরবের চিরায়ত পরিস্থিতি বদলে দিতে ভূমিকা রাখছেন। তারা এমন অনেক সুযোগ গড়ে তুলছেন যাতে নারী ও পুরুষ একসঙ্গে কথা বলতে পারেন, আলোচনা করতে পারেন। তারা হতে পারেন সমাজের যেকোনো অংশ। কোনো শিল্পী কিংবা চলচ্চিত্র নির্মাতা।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এর নতুন ও উদার সৌদি নীতির ফলে সেখানের ধর্মীয় পুলিশগুলো অনেকটাই ‘নখদন্তহীন’ হয়ে আছে। যারা আগে এসব ধর্মীয় শৃঙ্খলার তদারকি করত।
সৌদি আরবের দুই-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার বয়স ৩০ এর নিচে। নতুন প্রজন্মের এই তরুণ-তরুণীরা কনসার্ট ও মুভি থিয়েটারে ঝুঁকছে। সন্ধ্যার পর তাদের ঘুরতে ও বিনোদনকেন্দ্রে সময় কাটাতে দেখা যায়। যদিও অ্যালকোহল জাতীয় পণ্যে এখনো রয়েছে বিধিনিষেধ।
আবদুলরহমান নামের রিয়াদের এক উবার চালাক জানান, এসব নতুন নতুন জায়গাগুলোতে ভিড় জমছে কারণ তাদের আসলেই খুব বেশি কিছু করার নেই।
রিয়াদে এই পরিবর্তনটা দ্রুত হলেও ছোট ছোট শহরগুলোতে তেমনটা এখনো দেখা যাচ্ছে না।
মদিনার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন যায়েদ আবদুলরহমান (২৬) নামের এক যুবক। তিনি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে এক নারীর সঙ্গে পরিচিত হন ও রিয়াদের একটি রেস্টুরেন্টে তার দেখা করেন। এটা তাদের জন্য একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা।
আবদুলরহমান তার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। আমার ক্ষেত্রে হয়ত একটু দেরিতে এমনটা ঘটল।
মানুষ আগের চেয়ে বদলে গেছে, এমনটাই জানান তিনি।
খবর দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের।
কফি শপ ক্যাফে নারী নারীর অধিকার মোহাম্মদ বিন সালমান যুবরাজ সালমান সমাজ ব্যবস্থা সৌদি আরব