Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফাইভ জি উপভোগ করতে ডিজিটাল মেলায় ভিড়


১৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:৪৬

ঢাকা: দেশে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল সেবার প্রদর্শনী করছে হুওয়ায়ে ও চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জেডটিই করপোরেশন। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) শুরু হওয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় ‘ফাইভ জি’ নামে পরিচিত পঞ্চম প্রজন্মের প্রযুক্তির উদ্ভাবন, ব্যবহারিকসহ পণ্য এবং সেবার দেখা মিলছে জেডটিই প্যাভিলিয়নে। আর হুওয়ায়ের ৫-জি’তে ১.৬ জিবিপিএস গতির সাক্ষী হয়েছে ঢাকা। এদিকে পঞ্চম প্রজন্মের সেবা দেখতে স্টলগুলোতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সকালে ডাক টেলিযোগাযোগ বিভাগের আয়োজনে তিনদিন ব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও ডাক মন্ত্রণালয়ের সচিব নূর উর রহমান, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও ঝাং ঝেংজুন।

বিজ্ঞাপন

দেশের মানুষের কাছে ‘ফাইভ জি’ প্রযুক্তি তুলে ধরার পাশাপাশি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কার্যক্রমের আওতায় গত এক দশকে সরকারের সাফল্যের চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে এ মেলায়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে আয়োজিত প্রদর্শনীর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘প্রযুক্তির বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় প্রযুক্তির মহাসড়ক।’

মেলা প্রাঙ্গণে নয়টি স্ট্যান্ড নিয়ে বড় পরিসরে নির্মিত ‘জেডটিই বুথ’ প্রাঙ্গণে ব্যবসায় সমাধান, টার্মিনাল অভিজ্ঞতার পাশাপাশি ‘সিস্টেম সলিউশন’ প্রদর্শনী এলাকায় ‘সহজীকরণের মাধ্যমে বড় কিছু’ তুলে ধরা হচ্ছে। এ ছাড়াও ফাইভ জি প্রদর্শনীর পাশাপাশি দর্শনার্থীদের কাছে নেটওয়ার্ক একসিলারেশন, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ চাহিদাভিত্তিক পরিবহন নেটওয়ার্ক, স্বয়ংস্ক্রিয় চিপসেটের পাশাপাশি ‘কমন কোর’ নামে সেবা তুলে ধরা হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দিতে। ফলে উন্নত ও ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে দর্শনার্থীরা ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে জেডটিই প্যাভিলিয়নে ভিড় করছে।

অন্যদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জেডটিই প্যাভিলিয়ন প্রদর্শন করে জেডটিইর উন্নত প্রযুক্তি বাংলাদেশের মানুষের মাঝে উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ জানান। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরের জন্য একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

অপরদিকে, মেলায় ফাইভ জির ৫-জি’তে ১.৬ জিপিএস গতির সাক্ষী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে মেলার টাইটেনিয়াম সহযোগী ‘হুয়াওয়ে’।

২০১৮ সালের ২৫ জুলাই বাংলাদেশে ৫-জি সেবা পরীক্ষায় মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিলো হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড। তখন ৮০০ মেগাহর্স স্পেকট্রাম ব্যবহার করে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ৪ জিবি পর্যন্ত ইন্টারনেটের গতি পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে এখন মাত্র ১০০ মেগাহর্স স্পেকট্রাম (গতবারের ৮ ভাগের এক ভাগ) ব্যবহার করেই প্রতি সেকেন্ডে ১.৪ জিবি থেকে ১.৭ জিবি পর্যন্ত গতিতে ডেটা ট্রান্সফার করা সম্ভব হবে।

দর্শনার্থীরা মেলার উদ্বোধনী দিনেই সেকেন্ডে ১.৬ জিবি গতিতে ডেটা ট্রান্সফারের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ৫-জি’র উন্নয়ন ও গবেষণায় হুয়াওয়ের দীর্ঘদিনের অবিরাম প্রচেষ্টার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে। ৫জি’র অত্যাধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও গবেষণায় গত ১০ বছর কাজ করছে হুয়াওয়ে আর এর মধ্যেই এ জন্য ব্যয় করেছে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও ঝাং ঝেংজুন বলেন, ‘প্রযুক্তিগত সুবিধাকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গত ২১ বছর ধরে এদেশের আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি, টেলিকম অপারেটর ও স্থানীয় সহযোগীদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে হুয়াওয়ে। এখন ৫-জি চালু হয়েছে এবং হুয়াওয়েও প্রস্তুত। ৫ জি’র গবেষণা ও উন্নয়নে আমরা এক দশক ধরে কাজ করছি, যেখানে গত ১০ বছরে ব্যয় হয়েছে প্রায় চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৫-জি গবেষণা ও উন্নয়নে আমরাই শীর্ষস্থানীয় এবং ২১ হাজারেরও বেশি থ্রি জিপিপি ৫জি এনআর সমেত ৫-জি পেটেন্টও আমাদের সবচেয়ে বেশি।’

মেলায় আগত একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মিলন বলেন, ‘এ মেলার আয়োজন একটি দারুণ উদ্যোগ। আরও নতুন প্রযুক্তি এলে আমাদের জীবনে কী প্রভাব পড়বে, কতটা সহজ হবে আমাদের জীবন, তার ধারণা পেলাম এখানে। হুয়াওয়ে প্যাভিলিয়নে আমি ৫জি উপভোগ করলাম। বুঝতে পারলাম, ভবিষ্যতে কতটা দ্রুত হবে আমাদের কাজ। আমরা সারাদেশে ৫ জি’র অপেক্ষায় থাকলাম।’

তিন দিনব্যাপী মেলা চলাকালে আগত দর্শনার্থীরা হুয়াওয়ের প্যাভিলিয়নে সরাসরি ৫জি স্পিড ও লো- ল্যাটেন্সি অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন। এ ছাড়াও আকর্ষণ হিসেবে থাকছে বিশেষ একটি রোবট। যাকে হাতের ইশারায় পরিচালনা করে ফুটবল খেলা যাবে। ৫ জি প্রযুক্তিতে কত দ্রুত হিউম্যান টু মেশিন কিংবা মেশিন টু মেশিন কমিউনিকেশন সম্ভব তা তুলে ধরার উদ্দেশে এ আয়োজন।

পাশাপাশি আরও একটি প্লে-জোন থাকছে যেখানে সবাই ৫জি প্রযুক্তির মাধ্যমে রিয়েল-টাইম ভি-আর উপভোগ করতে পারবেন। ৫-জি ভি-আর পরার সঙ্গে সঙ্গেই অংশগ্রহণকারী নিজেকে খুঁজে পাবেন স্কিইরত অবস্থায়। উন্নত প্রযুক্তি এবং অডিও কিংবা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সরাসরি অভিজ্ঞতা দিতেই হুয়াওয়ের এই আয়োজন। থাকছে হুয়াওয়ের ৫জি স্মার্টফোনের অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগ। দর্শনার্থীরা চাইলে কিনতে পাবেন বাজারে বর্তমান হুয়াওয়ের ফোনগুলোও।

মেলায় ৩৫ থেকে ৪০টি আইএসপি প্রতিষ্ঠান, প্যারেন্টাল কন্ট্রোল, ট্রিপল প্লে (এক ক্যাবলে ল্যান্ডফোনের লাইন, ইন্টারনেট ও ডিশ সংযোগ, মোবাইল অ্যাপস, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ও প্রযুক্তি) ইত্যাদি প্রদর্শন করছে। এ ছাড়াও ওয়ালটন, স্যামসাং, সিম্ফনির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্য দেখাবে, দেশি সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো তাদের তৈরি সফটওয়্যার ও সেবা উপস্থাপন করছে। টেলিকম অপারেটরগুলো তাদের ভয়েস, ইন্টারনেট ও মূল্য সংযোজিত সেবা (ভ্যাস) দেখাচ্ছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় ১০০টি স্টল, মিনি প্যাভিলিয়ন ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ডিজিটাল অগ্রগতি তুলে ধরা হচ্ছে। মেলায় আছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পৃথক কর্নার। ওই কর্নারে প্রযুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনী তুলে ধরা হচ্ছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ ডিজিটাল মেলা ফাইভ-জি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর