রাজাকারের বিতর্কিত তালিকা প্রকাশ নিয়ে সংসদে ক্ষোভ
১৬ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৫৫
সংসদ ভবন থেকে: মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে রাজাকারের বিতর্কিত তালিকা প্রকাশ করেছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা।
তাদের ক্ষোভের জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, রাজাকারের তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তারা সক্রিয় ছিল কি না, তা শুধু যাচাই করার ব্যাপার। এ ব্যাপারে সমস্ত তথ্য-প্রমাণ আছে। তবে বিষয়টি আরও যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ সব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন।
লিখিত প্রশ্নের পর সম্পূরক প্রশ্নে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেই, এ কথাটি সরাসরি বলা যায় না। কারণ ওই মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এটি প্রকাশ হয়েছে। এ তালিকা সঠিক আছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব ছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। প্রকৃত রাজাকাররা এই তালিকায় আসেনি।’
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ’আমি আগেই দুঃখ প্রকাশ করে সেই তালিকা প্রত্যাহার করে নিয়েছি ভুল-ত্রুটি থাকার কারণে। ভবিষ্যতে যাতে আর ভুল-ত্রুটির পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য আমরা সকলের সহযোগিতা নিয়ে এবং সম্পূর্ণরূপে যাচাই-বাছাই করে ভবিষ্যতে তালিকা প্রকাশ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজাকারের তালিকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রণয়ণ করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ হতে ১০ হাজার ৭৮৫ জন রাজাকার, আলবদর, আলশামস এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের একটি তালিকা এ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে। প্রাপ্ত তালিকা হুবহু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় তালিকা প্রস্তুত করেনি, সেহেতু কারও গাফিলতি থাকলে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে পারে।’
এ সময় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও সরকারি দলের সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন,‘তালিকার মালিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাই তারাই তালিকাটি প্রকাশ করতে পারত। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী কেন সেটি প্রকাশ করলেন? উনি (মন্ত্রী) সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে পারেননি, পারবেনও না।’
জবাবে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা যে তালিকা প্রকাশ করেছি সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও প্রণয়ন করেনি, তাদের কাছে যা সংরক্ষিত ছিল তাই দিয়েছে। তালিকায় যাদের নাম গিয়েছে তারা শুধু সক্রিয় ছিল কি না, তা শুধু যাচাই করার ব্যাপার। তবে ওনাদের নাম যে তালিকাতে আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমার যেটা অভিজ্ঞতা হয়েছে তালিকা করতে, তখন মেম্বর-চেয়ারম্যানদের কাছে চাওয়া হয়েছে, কারা কী করবে? তারা অজ্ঞাতেই হয়থবা অনেকের নাম দিয়েছে। সে জন্যই এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে যাচাই-বাছাই করেই তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
জাতীয় সংসদ মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী রাজাকার রাজাকারের তালিকা