ফেসবুক-ইউটিউবে বিজ্ঞাপন: বেসিস সদস্যদের জন্য সহজ হলো অর্থ পরিশোধ
১৮ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৪৩
ঢাকা: এখন থেকে আরও সহজে ফেসবুক-ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বিজ্ঞাপনের অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন দেশের তথ্য প্রযুক্তির খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সদস্যরা। সম্প্রতি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেসিস সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে কো- ব্র্যান্ডেড কার্ডে ডিজিটাল মার্কেটিং’র লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বেসিসের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে, কো- ব্র্যান্ডেড কার্ড দিয়ে আইটি এবং আইটি সেবা বা পণ্য ক্রয় করা গেলেও, ডিজিটাল মার্কেটিং খাতে এই কার্ড ব্যবহার করা যেত না। এজন্যও এই কার্ড ব্যবহারের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। নতুন প্রজ্ঞাপনের ফলে কো-ব্র্যান্ডেড কার্ড দিয়ে ফেসবুক ও গুগলসহ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অর্থ পরিশোধ করতে পারবে বেসিসের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো।
গত বছরের নভেম্বরে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয় বেসিসের। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল এবং নির্বাহী পরিচালক হুমায়ুন কবির ও জেনারেল ম্যানেজার খুরশিদ ওয়াহাবের সঙ্গে এ বিষয়ে দু’টি পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ১১ টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের হেড অব কার্ডস ও হেড অব রিটেইল ব্যাংকিংসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বেসিসের পক্ষে উভয় সভায় বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর নেতৃত্ব দেন। এছাড়া বেসিস সহ-সভাপতি শোয়েব আহমেদ মাসুদ ও বেসিসের ডিজিটাল কমার্স স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল ওই দুই বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বেসিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল শিল্পের সঙ্গে জড়িত আছে ছোট-বড় প্রায় এক হাজারের মতো এজেন্সি। এ শিল্পে কর্মরত রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার জনবল। যারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রতিনিয়ত তৈরি করে যাচ্ছে অসংখ্য ডিজিটাল কন্টেন্ট এবং প্রদান করছে ডিজিটাল মিডিয়ার বিভিন্ন সার্ভিস (বিজ্ঞাপন বিতরণ, ক্রয়, বিজ্ঞাপনের প্রযুক্তি প্লাটফর্ম, দেশীয় কনটেন্ট প্ল্যাটফর্ম ইত্যাদি)।
ফেসবুক ও গুগলে প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন যাচ্ছে। এর বেশিরভাগ পরিশোধ হচ্ছে অবৈধ চ্যানেলে। আর বৈধভাবে পরিশোধ করা হয় বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ইস্যুকৃত ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ড দ্বারা। এই সমস্ত কার্ডে ট্রাভেল কোটায় বছরে ১২ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত খরচের সুবিধা থাকে। বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, ছোট এজেন্সি, ই-কমার্স ও এফ-কমার্স মডেলের অসংখ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা ব্যবহার করেই গুগল এবং ফেসবুকে বিজ্ঞাপনের মূল্য পরিশোধ করে থাকে।
এ প্রেক্ষিতে কো-ব্র্যান্ডেড কার্ডের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের পেম্যান্ট প্রদান করার সুবিধা চাওয়া হয়। বেসিসের দাবির প্রেক্ষিতে প্রজ্ঞাপন জারি করে কো- ব্র্যান্ডেড কার্ডের প্রস্তাবনা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বার্ষিক ব্যয়সীমা ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার মার্কিন ডলার করেছে।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা স্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে শক্তিশালী করার কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আনন্দিত বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রায় আমাদের সহায়তা করেছেন। ক্রমবর্ধমান এই খাতের প্রসারের বেসিস সদস্যদের জন্য নেওয়া সিদ্ধান্ত সুদূরপ্রসারী সুফল বয়ে আনবে। আমি বাংলাদেশ ব্যাংক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সর্বোপরি বাংলাদেশ সরকারকে স্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
বেসিস ডিজিটাল মার্কেটিং স্থায়ী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক এবং বেসিস পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, ‘ডিজিটাল মার্কেটিং খাত আগের চেয়েও দ্রুত গতিতে বিকশিত হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের আকার এবং কর্মসংস্থান বেড়েছে। বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে স্থানীয় খাতের বিকাশে বেসিস সদস্য তথা সমগ্র খাতের জন্য সহায়ক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমি বাংলাদেশ ব্যাংককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’