Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন গড়তে চায় ভারত


১৯ জানুয়ারি ২০২০ ২০:২৪

ঢাকা: হালকা প্রকৌশল ও প্রকৌশল পণ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন গড়তে চায় ভারত। এ জন্য আগামী ২২ থেকে ২৪ জানুয়ারি রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দ্বিতীয়বারের মতো ভারতীয় প্রকৌশল প্রদর্শনী ‘ইন্ডি বাংলাদেশ ২০২০’-এর আয়োজন করেছে ঢাকায় ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতাধীন সংস্থা ইইপিসি ইন্ডিয়া।

রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে রোববার (১৯ জানুয়ারি) ‘ইন্ডি বাংলাদেশ ২০২০’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান হয়। সংবাদ সম্মেলনে ইইপিসি ইন্ডিয়ার পরিচালক গুরভিন্দার সিং ও ভারতীয় দূতাবাসের বাণিজ্যিক প্রতিনিধি প্রময়েশ বাসাল উপস্থিত থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, ভারতীয় প্রকৌশল প্রদর্শনী ‘ইন্ডি বাংলাদেশ ২০২০’-এ ১২০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে, এর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের। প্রদর্শনীটি আয়োজনে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন ছাড়াও সহায়তা করছে এফবিসিসিআই, আইবিসিসিআই, বিইআইওএ ও বিইএমএমএ’র মতো শীর্ষস্থানীয় বাংলাদেশি চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন। আগামী ২২ জানুয়ারি সকাল ১১টায় আইসিসিবি’র ১ নম্বর হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মামুন হুমায়ূন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাংগুলি দাশ ভারতীয় প্রকৌশল প্রদর্শনী ইন্ডি বাংলাদেশ ২০২০ উপলক্ষে এক বার্তায় বলেন, ‘বাংলাদেশে বিস্ময়কর ৮ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেশটিকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য একটি আদর্শ স্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালকে হালকা প্রকৌশল পণ্যের বছর হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন উল্লেখ করে ভারতীয় হাইকমিশনার আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশে প্রকৌশল যন্ত্রপাতি ও মেশিনারি প্রস্তুত ও সরবরাহকারীদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ইন্ডি ২০২০ একটি দারুণ প্লাটফর্ম হিসেবে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

রীভা গাংগুলি দাশ বলেন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন গঠন এবং ইন্টিগ্রেশনে কাজ করতে পারে।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষস্থানীয় এবং এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে টেক্সটাইল মেশিনারি সরবরাহের সুযোগ রয়েছে ভারতের। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে ভারতের প্রকৌশল শিল্প দৃঢ় ভিত্তির ওপর অধিষ্ঠিত। একইভাবে হালকা প্রকৌশল ও প্রকৌশল পণ্যের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে এবং এই খাতে ভারতের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশ যেহেতু একটি আধুনিক অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, এ জন্য বাংলাদেশকে প্রকৌশল ক্ষেত্রে আরও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে, যা আধুনিক শিল্পের ভিত্তি।

ইইপিসি ইন্ডিয়ার পরিচালক গুরভিন্দার সিং বাংলাদেশকে ভারতের অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে জানান, ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রফতানির পরিমাণ ছিল ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। তিনি আরও জানান, দ্বিতীয়বার বাংলাদেশে ইন্ডি আয়োজনের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে দেশটির উন্নয়নে ভারত সরকারের অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটেছে।

গুরভিন্দার সিং বলেন, ঢাকা-নয়াদিল্লির মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। দুই দেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী বয়ে গেছে। ভারতের সেভেন সিস্টার রাজ্যের উন্নয়নে বাংলাদেশ নয়াদিল্লিকে একাধিক সুবিধা দিচ্ছে। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কও ইতিবাচকভাবে বাড়ছে। এই অঞ্চলে আন্তঃদেশীয় গাড়ি চলাচলের জন্য যে বিবিআইনের (বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল চার দেশের মধ্যে গাড়ি চলাচল চুক্তি) কাঠামো প্রস্তুত হয়েছে, সেখানেও ঢাকা-নয়াদিল্লি রয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরকে হালকা প্রকৌশল পণ্যের বছর হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তাই বাংলাদেশ ও ভারত মিলে যৌথভাবে এই অঞ্চলের (দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া) প্রকৌশল খাতের সাপ্লাই চেইন গড়তে পারে, যার সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে।

গণমাধ্যমকর্মীদের একাধিক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় দূতাবাসের বানিজ্যিক প্রতিনিধি প্রময়েশ বাসাল বলেন, ‘চট্টগ্রামের মিরেরসরাই ও মোংলাতে ভারতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার কাজ চলছে। বিশেষ এই অঞ্চল গড়তে যোগাযোগ কাঠামোসহ অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে বিশেষ এই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার কাজ শেষ হবে। তখন ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা প্রকৌশল খাতসহ একাধিক খাতে বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগ করবে।’

জানা গেছে, ইন্ডি বাংলাদেশের প্রথম আসর ২০১৭ সালের ২ থেকে ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। প্রথম আসরে শতাধিক ভারতীয় প্রকৌশল এবং প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। ইন্ডি বাংলাদেশ ২০১৭ ভিজিট করেন চার হাজারেরও বেশি ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য প্রতিনিধি।

ইইপিসি ইন্ডিয়া ইন্ডি বাংলাদেশ ২০২০ প্রকৌশল খাত প্রকৌশল পণ্য বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় হালকা প্রকৌশল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর