‘বর্তমান সমাজে মানুষ নীতিহীনতার মাঝে বাস করছে’
২০ জানুয়ারি ২০২০ ২২:৩২
বর্তমান সমাজে মানুষ নীতিহীনতার মাঝে বাস করছে। যারা নীতি পালন করছে, তারা অস্বস্তির মধ্যে পড়ছে। নীতি পালন করলে মানুষ বোকা মনে করে। এমন পরিস্থিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ যদি নীতিহীন হয়ে যায়, তখন নীতির সংগ্রাম ছাড়া বিকল্প নেই। খাবার টেবিল থেকে শুরু করে সর্বত্র নীতির সংগ্রাম চালাতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন ত্যাগ, মহৎ আদর্শ ও বাস্তবিক দৃষ্টান্ত।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দশম নৈতিকতা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘এথিকস ক্লাব বাংলাদেশ’- আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে, আমি সেটা স্বীকার করছি। এমনকি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনেও ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু আমাদের জাতি গঠনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা কী? বলতে পারেন ব্যক্তি তৈরি করছে, সরকারের সিভিল সার্ভিসে যাচ্ছে, শিক্ষকতা করছে। এককথায় বীজ দিয়ে বীজ উৎপাদন করছি। আমাদের সমাজ ও সাহিত্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বড় ইফেক্ট থাকা উচিত ছিল। এখনো আমাদের ধার করা লেখা-পড়া দিয়ে চলতে হয়। আমরা মৌলিক কিছু রচনা করতে পারছি না। একটি সমাজ যখন একশ বছরেও কোনো পন্ডিত তৈরি করতে পারে না, তখন বুঝতে হবে সমাজে ত্রুটি আছে।’
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘সবচেয়ে বড় অন্যায় হচ্ছে শোষণ। বর্তমানে দেখা যায়- কেউ অধিকতর ধনী হচ্ছে, কেউ ফকির হচ্ছে। রাজনীতির শুরু হয় অন্যায় দিয়ে। কার টাকা বেশি আছে সেটা দেখে আপনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিচ্ছেন। আত্নীয় স্বজন, আঞ্চলিকতা ও দলীয় পরিচয়ে টিচার হয়ে যাওয়া অনৈতিকার উদাহারণ। বর্তমানে দেশের এমন অবস্থা যে নীতি পালন করে চললেই ক্ষতি, নীতি পালন না করলে লাভ। তাহলে দেশের কোন অবস্থা হবে?’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘বর্তমানে নীতির ওপর টিকে থাকা খুব কঠিন। আমি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে তিন ভোটে হেরে গিয়েছি। কেন হেরে গিয়েছি? সেটা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়? আমরা তো একটা দল থেকে নির্বাচন করেছি। কেন জানি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অসঙ্গতি হলে সাংবাদিকরা আমাকে প্রশ্ন করেন। ভর্তি প্রক্রিয়া (ডাকসু নেতাদের) নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। আমি বলেছিলাম সামজিক বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি করানো হয় না। এমন কোনো নিয়ম নাই। আমি এমন কথা কেন বললাম এটা একটা বিভাগের শিক্ষকেরা মেনে নিতে পারে না। যার ফল আমাকে পেতে হলো।’
আলোচনা সভায় ক্লাবের সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীমের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক রাশেদা ইরশাদ নাসির, এথিকস ক্লাব বাংলাদেশ-এর প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রুপাসহ অনেকে।