‘সাহিত্যকর্মে মুক্তির পথ তৈরি করেছেন কবি জসীম উদদীন’
২০ জানুয়ারি ২০২০ ২৩:০৯
কবি জসীম উদদীন তার সাহিত্যকর্মে কৌশলে মুক্তির পথ তৈরি করেছেন। পাকিস্তান হওয়ার পরে যখন সংখ্যালঘুরা পাশের দেশে চলে যাচ্ছে তখন জসিম উদ্দীন খুব হৃদয় বিদারক কবিতা লিখেছেন। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার পক্ষে কাজ করেছেন এবং বাংলা বর্ণমালা সংস্কারের জন্যও কাজ করেছেন। তিনি তার সাহিত্য কর্মের মাধ্যমে বাংলার মানুষের কাছে এবং সাহিত্যপ্রেমী প্রত্যেকটি ব্যক্তির মনে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদদীন হলে কবির ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত
‘কবি জসীম উদদীনের সাহিত্য কর্ম’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘জসীম উদদীন যা লিখেছেন তা একেবারে অকৃত্রিমভাবে লিখেছেন। তার দেখা গ্রাম, গ্রামের মানুষ এবং প্রকৃতির মধ্যে সব রকম চরিত্র তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। জসীম উদদীন দেশকে ভালোবাসতেন, দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন এবং তিনি ছিলেন উদার হৃদয়ের অধিকারী।’
সেমিনারে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘এটা দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমরা যার নামাঙ্কিত হলে বাস করছি অনেকেই তার সম্পর্কে জানি না। এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজনের মাধ্যমে হলের শিক্ষার্থীদের কিছু জানার পথ তৈরি করে দেওয়ায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। যতদিন বাঙালি, বাংলা বেঁচে থাকবে ততদিন জসিম উদ্দীন বেঁচে আছে। গ্রামের রাখাল যারা ফসল ফলায়, পুরাণের রাখাল এবং রাজনীতির রাখাল যারা দেশ গঠন করেন, এদের সবাইকে যিনি এক বিন্দুতে মিলিয়েছেন, তিনিই এই কবি জসীম উদদীন।’
তিনি আর বলেন, ‘বাংলা ভাষার মধ্যে ইংরেজি বলা আমাদের একটি রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রোগ থেকে বাঁচতে হলে জসীম উদদীনকে বুঝতে হবে। আমাদের দেশের অনেক রাজনৈতিক নেতা আছে, যারা ঠিক মতো বাংলা উচ্চারণ করতে পারে না। তাই আমাদের মায়ের ভাষাকে লালন করতে হবে যেভাবে কবি জসীম উদদীন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লালন করে গেছেন।’
এসময় কবি ও গবেষক ইমরান মাহফুজ বলেন, ‘পৃথিবীর যত বড় সাহিত্যিককে আমরা দেখেছি, বড় নোবেল অর্জনকারীকে দেখেছি তারা সবাই নিজেদের গল্প লিখে বিখ্যাত হয়েছেন। জসীম উদদীনকে পড়া যতটা না জরুরি, তার থেকে বেশি জরুরি জসীম উদদীনকে অনুভব করা। একজন কবি কতটা জীবিত থাকে, কতটা তাজা থাকে, সেটা অনুভব করা যায় তাকে কতটা সমালোচনা করা হচ্ছে তার থেকে। কারও সমালোচনা চলা মানে তার সেই কাজটি বর্তমানেও প্রাসঙ্গিক।’
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে কবি জসীম উদদীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই সেমিনারে কবি জসীম উদদীন সম্পর্কে গুণীজনদের আলোচনায় আমি যেভাবে আলোকিত হয়েছি, আমি আশা করবো আমার হলের শিক্ষার্থীরা জসীম উদদীনকে সেভাবে ধারণ করে নিজেদের আলোকিত করবে।