রাখাইনে ‘গণহত্যা’ নয় ‘যুদ্ধাপরাধ’ খুঁজে পেয়েছে সরকারি কমিশন
২১ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:০১
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘গণহত্যা’ নয় ‘যুদ্ধাপরাধ’ খুঁজে পেয়েছে সরকারি তদন্ত কমিশন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) কমিশনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাখাইনে ২০১৭ সালে কোনো ধরনের ‘গণহত্যা’ সংঘটিত হয়নি। ‘যুদ্ধাপরাধের’ মতো কিছু ঘটনা ঘটেছে। খবর রয়টার্স।
এদিকে, মানবাধিকার সংস্থা ও রোহিঙ্গা নেতাদের পক্ষ থেকে সরকারি কমিশনের এই রিপোর্ট প্রত্যাখান করা হয়েছে। তারা বলেছেন, আন্তর্জাতিক আদালতের রায় ঘোষণার একদিন আগে এই রিপোর্ট প্রকাশ এক ধরনের সরকারি ‘ভোজবাজি’।
তদন্ত কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাথে ‘যুদ্ধাপরাধ’ সংঘটিত হয়েছে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে চলা ওই অভিযানে কোথাও কোথাও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটেছে। সে কারণে ওই অভিযানের কয়েকটি অংশীদারের মধ্যে সেনাসদস্যদের অভিযুক্ত করে প্রচলিত আইনে বিচার করা যেতে পারে। তাদের সংঘটিত অপরাধের মধ্যে নিরপরাধ গ্রামবাসীকে হত্যা এবং তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর রয়েছে।
গ্রামবাসী, সেনাসদস্য এবং অন্যান্য প্রত্যক্ষ দর্শীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে কমিশন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, ৩০ পুলিশ পোস্টে প্রথম আক্রমণ চালিয়ে রোহিঙ্গা জঙ্গিরাই এই সেনা আক্রমণ ও সশস্ত্র সংঘর্ষের সূত্রপাত করেছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের জাতিগত নিধনের উদ্দেশ্যে কোনো ধরনের গণহত্যার মানসিকতা খুঁজে পায়নি কমিশন।
এ ব্যাপারে মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) জানিয়েছেন, সরকার কমিশনের এই রিপোর্টের সাথে একমত। এখন পরবর্বতী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এই রিপোর্ট সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে। তিনি এই রিপোর্ট সেনাপ্রধানের কাছে পাঠাবেন। যেনো সেনাবাহিনী তাদের চলমান তদন্ত প্রক্রিয়া আরও তরান্বিত করতে পারে। এই রিপোর্টের উল্লেখযোগ্য অংশ সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
এর আগে, রাখাইনের গু দার পিন গ্রামে সংঘটিত অপরাধের দায়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এক কোর্টমার্শালের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রেজিমেন্টের কয়েকজন অফিসার ও সৈনিককে শাস্তি দিয়েছিল সেনাবাহিনী।
তবে, সাম্প্রতিক তদন্ত কমিশনের রিপোর্টের ব্যাপারে সেনাবাহিনীর মুখপাত্রের সাথে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।