আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর বর্তমান প্রধান আবু ইব্রাহিম আল হাশেমি আল কুরাইশির আসল নাম আমির মোহাম্মাদ আব্দুল রহমান। সে আব্দুল্লাহ কারদাশ ও হাজী আব্দুল্লাহ নামেও পরিচিত। কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এ খবর জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
এর আগে, আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) সাবেক প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে নতুন প্রধান হিসেবে আবু ইব্রাহিম আল হাশেমি আল কুরাইশির নাম ঘোষণা করেছিল ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর। আইএসের একটি বিশ্বস্ত অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে মেসেজিং সার্ভিস টেলিগ্রামের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়েছিল।
তখনই, অনেক গণমাধ্যম নতুন খলিফা হিসেবে আব্দুল্লাহ কারদাশ দায়িত্ব নিয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছিল। বিবিসি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছিল, যেহেতু আবু ইব্রাহিম আল হাশেমি আল কুরাইশির কোনো নথি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নেই। তাই ধারণা কয়রা হচ্ছে যুদ্ধের খাতিরে তিনি এই ছদ্মনাম নিয়েছেন। তখন তার নাম ও বিশদ বিবরণ কিছুই উল্লেখ করা হয়নি আইএসের পক্ষ থেকে। বর্তমানে গোয়েন্দা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আইএস প্রধান হাশেমি ই আব্দুল্লাহ কারদাশ।
তিনি বাগদাদির এক সময়ের জেলসঙ্গী। তবে তার চেয়েও নিষ্ঠুর, আরও ধুরন্ধর। ইরাকের সুন্নিপ্রধান এলাকা তাল আফারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তরুণ বয়সে সাদ্দামের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মার্কিন আগ্রাসনের পর জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ২০০৩ সালে আটক হন। বাগদাদির সঙ্গে একই জেলে রাখা হয় তাকে। জেলে থাকতেই অন্যান্য বন্দিকে নিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠী গঠনের সব পরিকল্পনা করেন দু’জন।
জেল থেকে ছাড়া পেয়ে কারদাশ ফের আল কায়দায় যোগ দেন। গোষ্ঠীটির ধর্মীয় উপদেষ্টা ও শরিয়া বোর্ডের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আল কায়দা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আইএস সৃষ্টি হওয়ার পর বাগদাদির আনুগত্য স্বীকার করেন তিনি। কারদাশ শুরুর দিকেই আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীতে নাম লেখান। তখনও এ সন্ত্রাসীগোষ্ঠী অতটা পরিচিত বা বিস্তীর্ণ ভূ-ভাগ দখল করেনি। বাগদাদি তাকে প্রথমে ‘মুসলিম অ্যাফেয়ার্স’ বিভাগের দায়িত্ব দেন। আইএসের শীর্ষ উপদেষ্টা ও নীতি নির্ধারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এজন্য আইএস অনুসারীদের কাছে ‘প্রফেসর’ তথা ‘অধ্যাপক’ হিসেবেও পরিচিত।